মায়ানমারের চিন প্রদেশে চলতে থাকা সশস্ত্র সংঘর্ষের জেরে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের মিজোরাম রাজ্যে ঢুকে পড়ছেন। গত ২ জুলাই থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪,০০০ শরণার্থী সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন মিজোরামের বিভিন্ন গ্রামে। এই তথ্য সোমবার প্রকাশ করেছে রাজ্য প্রশাসন। মায়ানমারের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের চিন প্রদেশে দীর্ঘদিন ধরে সামরিক শাসনের (জুন্টা) বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে একাধিক বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এর মধ্যে অন্যতম দুই চিন-ভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন — চিন ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স (CNDF) এবং চিনল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স হুয়ালনগোরাম (CDF-H)। একসময় এই দুই গোষ্ঠী মিলিতভাবে জুন্টা বিরোধী লড়াইয়ে অংশ নিলেও, সাম্প্রতিক সময়ে ক্ষমতা ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। এই গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতির বলি হচ্ছেন সাধারণ নিরীহ মানুষ।
প্রবল বৃষ্টিতে ভয়াবহ দুর্যোগ হিমাচলে
মায়ানমারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত ভাগ করে নেওয়া মিজোরামের পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। গত কয়েকদিনে সীমান্ত পেরিয়ে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী প্রবেশ করেছেন রাজ্যে। মিজোরাম সরকারের এক আধিকারিক জানান, ২ জুলাই থেকে শুরু করে মাত্র ক’ দিনেই প্রায় ৪,০০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন মিজোরামে। যদিও রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে সাপডাঙা দাবি করেছেন, সংখ্যাটি প্রায় ৩,০০০। সর্বাধিক শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন চম্পাই জেলার জোখাওথার ও সইখুমপাই গ্রামে। সংঘর্ষে ঘরছাড়া হওয়া মানুষজন জীবন বাঁচাতে এই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ছেন। সংঘর্ষ ও শরণার্থী সমস্যার বিষয়ে মায়ানমার সরকার এখনও মুখ খোলেনি। আন্তর্জাতিক মহলে এর প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। বিশেষজ্ঞদের মতে, মায়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এতটাই অস্থির যে প্রতিবেশী দেশগুলির উপর এর প্রভাব ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলি মিজোরাম সরকারের মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করলেও বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক স্তরে সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছে। কারণ, যদি সংঘর্ষ দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে শরণার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে — যা সীমান্ত রাজ্যগুলির উপর চাপ বাড়িয়ে তুলবে।
মায়ানমারের
অভ্যন্তরীণ সঙ্কট এখন আর শুধু
তাদের দেশের সীমায় সীমাবদ্ধ নেই। তা ভারতের
সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতেও গভীর প্রভাব ফেলছে।
মিজোরাম সরকার আপাতত মানবিকতার দিকটি গুরুত্ব দিয়ে পরিস্থিতি সামাল
দেওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু যদি এই প্রবণতা
অব্যাহত থাকে, তবে তা আরও
বড় পরিসরের কূটনৈতিক এবং মানবিক সমস্যার
দিকে গড়াতে পারে।