#Pravati Sangbad Digital Desk:
এ যেন বিভীষনের চেয়ে এক পা এগিয়ে, ঘরে থেকেই ঘরের বিরুদ্ধে লড়াই। আর প্রবল স্নায়ু মুদ্রন শেষে জয়ের হাসি হাসলেন তিনিই। বিদ্রোহী শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডের অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী পদে অভিষেক সম্পন্ন হয়েছে গতকালই। মহারাষ্ট্রের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন একনাথ শিন্ডে। নতুন এই দায়িত্ব পেয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া “শুধু আমার সতীর্থরা নয়, গোটা মহারাষ্ট্র খুশি যে বালা সাহেব ঠাকরের শিব সৈনিক মুখ্যমন্ত্রী হয়েছে।”
৪০ জনেরও বেশি বিধায়কের সমর্থন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার পাশাপাশি বিজেপির সমর্থন নিয়েই বৃহস্পতিবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন তিনি। তবে ছিলেন না একজনও বিক্ষুব্ধ বিধায়ক, যাদের সমর্থন পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী হলেন শিন্ডে। তাঁরা বিজয় উৎসবে মাতেন গোয়ার হোটেলেই। তাই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার সাথে সাথেই একনাথ রাতের বিমানেই ফের রওনা হয়ে যান গোয়ার উদ্দেশ্যে।
বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মহারাষ্ট্রের নতুন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার সহকর্মী ও গোটা মহারাষ্ট্র খুশি যে বালা সাহেব ঠাকরের শিব সৈনিক আজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছে”। মহারাষ্ট্র্রের মানুষদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই সরকার মহারাষ্ট্রের মানুষদের জন্যই কাজ করবে। সমাজের প্রতিটা স্তরে সুবিচার করা হবে। একইসঙ্গে আমরা বালা সাহেব ঠাকরের মতাদর্শকেও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাব।”
কে পাবে কোন মন্ত্রক! এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, হোটেলে গিয়ে বাকি বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়া প্রসঙ্গেও তিনি বলেন, “মন্ত্রী তো ছিলামই। নতুন করে কোনও মন্ত্রিত্ব পাওয়ার লোভে উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গত্যাগ করিনি। কংগ্রেস-এনসিপি-র সঙ্গে মতাদর্শগত পার্থক্যের জন্যই মহা বিকাশ আগাড়ি জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছি।”
অন্যদিকে, বেশ খানিকটা নাটকীয় পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই জেপি নাড্ডার ঘোষনায় মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়ণবীস।
এভাবে রাজনৈতিক সংকটের সাময়িক যবনিকা পতন হয়েছে বলে মনে হলেও, অস্থিরতা থেকেই যাচ্ছে। মহারাষ্ট্রের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সুপ্রিম কোর্টের কাছে এক আবেদনে জানিয়েছেন। শীর্ষ আদালতকে উদ্ধব শিবির জানিয়েছে, “যে সকল বিধায়করা বিজেপির নির্দেশমতো কাজ করে চলেছেন, তারা এই ভাবে দলত্যাগ করে সাংবিধানিক পাপ করেছেন। বিধানসভার সদস্য হিসেবে তাদের আর একদিনও কাজ চালিয়ে যেতে দেওয়া অপরাধ হবে। এই অন্যায্য কাজ চিরস্থায়ী হতে দেওয়া অনুচিত হবে।”
উল্লেখ্য, বিদ্রোহ ঘোষণার পর সোমবারই মহারাষ্ট্র বিধানসভার ডেপুটি স্পিকারের কাছে একনাথ শিন্ডে শিবিরের ১৬ বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ করার আবেদন জানিয়েছিল উদ্ধব শিবির। আগামী সোমবার এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হবে। সেক্ষেত্রে, সোমবার মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে অত্যন্ত ‘হাই ভোল্টেজ’ দিন হতে চলেছে। শিন্ডে-শিবিরের বিপক্ষে রায় গেলে, নতুন করে আবার সংকট পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের রায় শিন্ডে শিবিরের পক্ষে গেলে শিবসেনার রাশ উদ্ধবের হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। উদ্ধবের বাবার প্রতিষ্ঠিত দল যদি একনাথের হাতে চলে যায়, তবে তা ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন নজির হয়ে থাকবে নিঃসন্দেহে।