#Pravati Sangbad Digital Desk:
যতবার আয়নার দিকে তাকান, ততবারই শুকনো প্রাণহীন চুলের গোছা দেখেই মনটা খারাপ হয়ে যায়? আসলে শীত চলে যাওয়ার পর পরই চুলটা যেন আরও শুকনো দেখায়। ঠান্ডা হাওয়া চুলের যে বারোটা বাজিয়ে দিয়ে গেছে, তা থেকে উদ্ধার পেতে চুলের বেশ খানিকটা সময় লেগে যায় এবং শুকনোভাব কাটিয়ে পুরোনো ঝলমলে মসৃণভাব ফিরিয়ে পেতে চুলের দরকার বিশেষ যত্ন।তবে চিন্তা করবেন না, কারণ চুলের শুকনোভাব দূর করতে আপনার হাতেও আছে একটি মহৌষধ যার নাম নারকেল তেল। চিরপরিচিত নারকেল তেল দিয়ে বানিয়ে নিন কিছু সহজ হেয়ার মাস্ক যা আপনার শুকনো চুলের বিশেষ যত্ন নেবে, নিয়মিত ব্যবহারে ফিরে পাবেন কোমল, মসৃণ চুলের গোছা। এ সব হেয়ার মাস্ক সহজেই বানিয়ে নেওয়া যায় বাড়িতেই, আর আপনার চুল পায় ভরপুর যত্ন!
নারকেল তেলের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল বৃষ্টি, সূর্য এবং দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ার কারণে চুলের যে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, তার হাত থেকে চুলকে সুরক্ষা প্রদান করতে পাড়ার ক্ষমতা। এটা সম্ভব হওয়ার কারণ হল নারকেল তেল চুলের খাদে গভীরভাবে প্রবেশ করতে পারে এবং চুলের স্ট্র্যান্ডটিকে ছাতার মতো আকারে শক্ত করে ধরে রাখতে সাহায্য করে। এমনকি যখন আপনি শ্যাম্পু করে এই তেল ধুয়ে ফেলেন, তখনও এটি চুলকে ভেতর থেকে রক্ষা করতে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন কারণে তৈরি অভ্যন্তরীণ ক্ষতি রোধ করতে এবং চুলকে সুস্থ, উজ্জ্বল রাখতেও নারকেল তেল বেশ উপকারী।
নারকেল তেল আর মধু, এই দুটি উপাদানই আর্দ্রতায় ভরপুর! এই মাস্কটি চুলের গভীরে ময়শ্চার আটকে রাখতে পারে, চুল হয়ে ওঠে মসৃণ আর চকচকে। চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী অর্গানিক নারকেল তেল হালকা গরম করে নিন, তাতে সমপরিমাণ মধু মেশান। এবার শুকনো চুলে সমানভাবে মেখে নিন। 20 মিনিট রেখে কোমল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন করলেই চুলের পুরোনো জেল্লা খুব তাড়াতাড়ি ফিরে পাবেন।
চুলের গভীরে পুষ্টি পৌঁছিয়ে তা আর্দ্র রাখে নারকেল তেল আর ডিম চুল করে তোলে চকচকে। ডিমের প্রোটিন চুল গোড়া থেকে মজবুতও করে। সুতরাং নিষ্প্রাণ চুলে স্বাস্থ্যের জৌলুস ফেরাতে এই মাস্কটি অত্যন্ত কার্যকর। একটা ডিম ফেটিয়ে নিন, তাতে দু’ টেবিলচামচ নারকেল তেল মেশান। এই মিশ্রণটি ব্রাশ দিয়ে পুরো চুলে ভালোভাবে মেখে নিন। 15-20 মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিন। শ্যাম্পুতে মিষ্টি গন্ধ থাকলে ডিমের গন্ধ কেটে যাবে। প্রতি সপ্তাহে একবার করুন আর দেখুন কেমন হেসে ওঠে আপনার চুল!
নারকেল তেলের কন্ডিশনার ব্যবহারের পদ্ধতি
১) আপনার পুরো চুল এবং মাথার ত্বকে পরিমাণমতো নারকেল তেলের হেয়ার কন্ডিশনার লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। শ্যাম্পু করার অন্তত আধা ঘণ্টা আগে এটি লাগিয়ে রাখুন। আপনি এটি সারারাতও লাগিয়ে রাখতে পারেন। তারপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন।
২) অল্প পরিমাণে এই কন্ডিশনার চুলে লাগান। তারপর উষ্ণ তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন মাথায়। আধা ঘণ্টা কন্ডিশনারটি লাগিয়ে রাখুন। তারপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
নারকেল তেলের কন্ডিশনার তৈরির নিয়ম
উপকরণ:
১.দুইটেবিল চামচ নারকেল তেল
২.এক টেবিল চামচ শিয়া বাটার
৩.এক চা চামচ জোজোবা অয়েল
৪.কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল
তেল মাথায় নিয়ে বেরোতে হবে না। শ্যাম্পু দেওয়ার আগে যদি নারকেল তেল দিয়ে মাসাজ করে নেওয়া যায়, তবে তা কন্ডিশনারের কাজ করে। শুধু চুল নয়, মাথার তালুও যত্নে থাকে। শ্যাম্পুর পরে কন্ডিশনার দেওয়ার একটা অসুবিধাজনক দিক আছে এই সময়ে। কন্ডিশনার যদি ভাল ভাবে না ধোয়া হয়, তবে চটচটে হয়ে যেতে পারে চুল। তাই নারকেল তেল দিয়ে আগেই সে কাজ সেরে ফেলা ভাল।
বর্ষাকালে চুলে নিয়মিত নারকেল তেল ব্যবহার করলে শুষ্ক ভাব কমে। ফলে চুল পড়ার সমস্যায় খানিকটা নিয়ন্ত্রিত হয়।ভাল ভাবে মাসাজ করা গেলে খুশকির সমস্যাও কমতে থাকে।নারকেল তেল দিয়ে মাথা মাসাজ করার পরে গরম জলে স্নান করুন। তাতে সবচেয়ে ভাল ফল মেলে।