Flash News
Monday, September 22, 2025

দৈহিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নে উড়ান উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণের

banner

journalist Name : SRIJITA MALLICK

#Pravati Sangbad Digital Desk:

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পরাজিত করে এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলেন ধূপগুড়ির পাপ্পু রায়। পাপ্পু জন্ম থেকেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। তাঁর উচ্চতা মাত্র দেড়ফুট। বাবা দিনমজুর,সহস্র প্রতিকুলতা থাকা সত্ত্বেও তাঁর ইচ্ছে স্কুল মাস্টার হয়ে বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়ানোর। ছেলের ইচ্ছেপূরণ কীভাবে করবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তাঁর বাবা বিশ্বনাথ রায় ও মা রেণুকা রায়। এতদিন কোলে করেই ছেলেকে স্কুলে নিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু, এখন ছেলেকে কলেজে কীভাবে নিয়ে যাবেন, সেই চিন্তাই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে তাঁদের মাথায়। এখন সরকারি সাহায্যের আশায় রয়েছে পাপ্পুর পরিবার। 
ধূপগুড়ির উত্তর আলতা গ্রামের বাসিন্দা পাপ্পু রায় ৩১০ নম্বর পেয়েছেন। তিনি ধূপগুড়ি কালীরহাট হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও আর্থিক অনটনের জন্য গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে পারেননি।
বিশ্বনাথবাবু বলেন,"আমার দুই ছেলে। পাপ্পু বড় ছেলে। ও এবার উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করল। ওর আরও পড়ার ইচ্ছে। কিন্তু,ছেলে যে দাঁড়াতে পারে না। কোথাও যাওয়া আসা করতে হলে আমাকে বা ওর মা’কে নিয়ে যেতে হয়। বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিমি দূরে ও স্কুলে পড়ত। সেখানে পরীক্ষা দিতে আমরাই কোলে করে নিয়ে গিয়েছিলাম। এখন ধূপগুড়ি কলেজে ভর্তি হতে চায়। কিন্তু, কলেজ তো আমাদের বাড়ি থেকে ১০ কিমি দূরে। কীভাবে ও যাবে বুঝতেই পারছি না। সরকারি ভাবে কোনওরকম সাহায্য পেলে পাপ্পু আরও পড়াশোনা করতে পারবে।" 
পাপ্পু জানান, গৃহশিক্ষকের কাছে যেতে পারিনি। কলা বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিয়েছি। আমার ইচ্ছে শিক্ষক হওয়ার। সরকারি ভাতা পাই। তবে চলাফেরা করা আমার পক্ষে কষ্টকর। বিশ্বনাথবাবু চান, যদি কোনওভাবে একটি হুইলচেয়ার পাওয়া যায় তো ভাল হয়। আর্থিক কারণে কোনওদিনই প্রাইভেট টিউশনে ভর্তি করাতে পারেননি ছেলেকে। নিজের চেষ্টায় পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে পাপ্পু। তার গলাতেও শোনা গেল যে, মনের জোরের গল্প। তাঁর কথায়, 'মনের জোর থাকলে কিছুই অসম্ভব নয়, নিজেকে কোনদিন প্রতিবন্ধী ভাবিনি কখনও। বরং মনে করেছি, আমিও সক্ষম। আমিও পারব'। ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীনেশ মজুমদার বলেন, পাপ্পুর বিষয়টি শুনেছি। ওঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হবে। 
অপরদিকে, ময়নাগুড়ি ব্লকের জোরপাকড়ির দুঃস্থ পরিবারের মেয়ে শঙ্করি অধিকারী এবছর উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৭৫ নম্বর পেয়েছেন। তাঁর বাবার ছোট একটি চা-বিস্কুটের দোকান রয়েছে। তাঁরা তিন বোন। বড় দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। অন্য দিদি কলেজে পড়েন। শঙ্করি ভূগোলে অনার্স নিয়ে অধ্যাপিকা হতে চান। কিন্তু, তাঁরও উচ্চ শিক্ষা জন্য প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক অনটন। শঙ্করি বাংলা, এডুকেশন ও সংস্কৃতে ৯৬ নম্বর করে, ভূগোলে ৯২ ও ইংরেজিতে ৯৫ নম্বর পেয়েছেন। শঙ্করি জানান, বাবা ছোট একটি চায়ের দোকান করে সংসার চালান। ভবিষ্যতে বাবা মায়ের পাশে দাঁড়ানোই আমার লক্ষ্য। স্কুল ও কোচিং সেন্টারের শিক্ষকরা আমাকে সহযোগিতা করায় আমি ৪৭৫ নম্বর পেয়েছি।

Tags:

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

রাজ্য শিক্ষা
Related News