#Pravati Sangbad Digital Desk:
ইতিহাস লিখল নিজামের শহর, এবারের আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হলো তারা। টাইব্রেকারে ৩-১ এ কেরালাকে হারিয়ে শুধু যে হায়দ্রাবাদই জিতল তা নয় সেই সঙ্গে যেন সত্যি হলো লীগের প্রথম সংস্করণে ইন্টারভিউ তে জিকোর বলে যাওয়া কথা " লো কুয়েরো, লো কুয়েরো..." অর্থাৎ দুর্দমনীয় ইচ্ছাশক্তির কাছে যে গোটা পৃথিবী হার মানতে বাধ্য; গতকালের ম্যাচে তা প্রমাণ হয়ে গেল।
যদি ম্যাচ এনালাইসিস করা হয় তাহলে দেখা যাবে পাসিং ও ট্যাকটিস কিন্তু কেরালার দখলেই যাবে । কিন্তু ওই যে ইচ্ছাশক্তি , জেদ ও জেতার একটা আগ্রাসন এই তিনটে জিনিসই হয়তো ম্যাচের ফারাক কিছুটা হলেও করে দেয় । আর কেরালা হয়তো লড়েও ম্যাচের চাপ নিতে পারেনি , তাই বারবার ফাইনালে উঠেও তাদের ট্রফি অধরাই থেকেছে। প্রথম থেকেই লড়াই না ছাড়া দুই দলের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত খেলার ফল ছিল ১-১। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে কেরালাকে এগিয়ে দেন পেনাল্টি রাহুল কেপি। বক্সের বাইরে থেকে শট নেন তিনি। কিন্তু হায়দ্রাবাদের গোলকিপারের ভুলে গোল হয়ে যায়। তাঁর হাতেই বল লেগে গোলে জড়িয়ে যায়। কেরালা ১-০ গোলে এগিয়ে যায়। নির্ধারিত সময়ের প্রায় ২ মিনিট আগে পর্যন্ত কেরালা এই অগ্রগমন ধরে রেখেছিল। কিন্তু ৮৮ মিনিটে অবিশ্বাস্য ভাবে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন সাহিল তাভোরা। প্রায় ২৫-৩০ গজ দূর থেকে তাঁর পা থেকে ধেয়ে আসা মিসাইল কেরালার জাল ছিঁড়ে দেয়। হায়দরাবাদের ফ্যানদের হতাশায় ডুবিয়ে গোল করে দেন তিনি। আইএসএল ফাইনালের ইতিহাসে এই নিয়ে তৃতীয়বার খেলা গড়ায় এক্সট্রা টাইমে। ১২০ মিনিটেও এদিন দক্ষিণের দুই দলকে আলাদা করা যায়নি। এক্সট্রা টাইমের শেষেও স্কোর থাকে ১-১। খেলা গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। সেখানেই বাজিমাত করে হায়দ্রাবাদ। পেনাল্টি শুটআউটে ৩-১ গোলে ফাইনাল জিতে নেয় তারা। লক্ষ্মীকান্ত কাট্টিমানির দু’টি দুরন্ত সেভই ইতিহাস লিখে দিয়ে চলে যায়।
একবার মারাদোনা বলেছিলেন - " আমাকে একটা শুধু বল পায়ে দাও, তারপর আমি কোনও প্রতিপক্ষকেই আর আস্ত রাখব না, ছাড়খার করে দেব।" এই প্রতিপক্ষে থাকেন কখনও টেরি বুচার, রিড, লিনেক্যার, পিটার শিল্টন কিংবা একটা আস্ত একটা পুঁজিবাদী পৃথিবী, একটা তারকা খচিত ব্রিটিশ দল যেখানে এফোঁড়ওফোঁড় হয়ে যায় এক বস্তিতে বেড়ে ওঠা জিনিয়াসের মরণপণ দৌড়ে। আর ফাইনালে যেন হোলিচরণ, তাভোরা, কামারারা যেন সেই যুগপেরোনো 'মারাদোনা' যারা শুধু জিততেই আসেন না , ইতিহাস রচনাও করে যান ।
তবে হায়দ্রাবাদ-কেরল ম্যাচে এদিন মাঠে ছিল ১০০ শতাংশ দর্শক। প্রসঙ্গত বলা চলে প্রায় ২ বছর পর আইএসএলে দর্শক ফিরল। হায়দরাবাদ এফসি এই প্রথম আইএসএল ফাইনাল খেলল। অন্যদিকে কেরালা ব্লাস্টার্স ২০১৪ ও ২০১৬ সালে আইএসএল ফাইনাল খেলেও খেতাব স্পর্শ করতে পারেনি। এবারও ব্যর্থতা তাদের সঙ্গী হল।
বিভিন্ন ব্যক্তিগত বিভাগে পুরস্কার জিতলেন যারা
● গোল্ডেন বুট - বার্থালোমিউ ওগবেচে (১৮ গোল , হায়দ্রাবাদ এফসি)
● গোল্ডেন গ্লাভস - প্রভসুখন গিল (কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি )
● ইমার্জিং ফুটবলার অফ দা ইয়ার : - রোশন সিং (বেঙ্গালুরু এফসি )
● সেরা ফুটবলার :- গ্রেগ স্টিওয়ার্ট (জামসেদপুর এফসি)
● সর্বাধিক সেভ : - লক্ষ্মীকান্ত কাট্টিমানি (৬১ সেভ , হায়দ্রাবাদ এফসি)
● সর্বাধিক পাস :- এডু বেদিয়া (১২৫৪ পাস )
● সর্বাধিক ট্যাকল : ব্রুনো সিলভা (১০৪টি ট্যাকল , বেঙ্গালুরু এফসি)