#Pravati Sangbad Digital Desk :
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলছে যুদ্ধ, রাশিয়া ইউক্রেন দুই তরফেরি অনেক সৈন্য প্রাণ হারিয়েছে, তবুও যুদ্ধ থামার নাম নেই। ইউক্রেন কার্যত শ্মশানে পরিণত হয়েছে, চারিদিকে শুধু কালো ধোঁয়া আর ছায়ের পাহাড়, তার মধ্যেই কোন রকমে বেঁচে থাকা। অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন, সেখানকার বাচ্চাদের স্কুল থেকে শুরু করে সরকারি অফিস আদালত সবই প্রায় ধ্বংস। ইতিমধ্যেই রাশিয়া ইউক্রেনের মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে, কিন্তু তাতেও যুদ্ধ থামার কোন সুরাহা হয়নি। রাশিয়া যুদ্ধ বিরতিও ঘোষণা করেছে মানবিক করিডরের খাতিরে, তাও যুদ্ধ বিরতি চলাকালীনই ফের গোলা বর্ষণ করেছে রুশ যুদ্ধ জাহাজ।
স্বাভাবিক ভাবেই ইউক্রেনের জনজীবন বর্তমানে তছনছ হয়ে গিয়েছে। এদেশের বহু পড়ুয়া ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলো, ভারত সরকারের তৎপরতায় তারা নিরাপদে দেশে ফিরে এসেছে, কিন্তু যারা কোন ভাবেই দেশে ফিরতে পারছেন না তাদের সাথে যোগাযোগ রাখছে ইউক্রেনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস, চালু করা হয়েছে হেল্পলাইন নাম্বারও। কিন্তু এত কিছুর মাঝেও মৃত্যু হয়েছে ভারতীয় দুই পড়ুয়ার।
সূত্রের দাবি অনুযায়ী, গতকাল রাশিয়া ইউক্রেনের তৃতীয় শান্তি বৈঠক ছিল, কিন্তু তাতে কিছু সুবিধা হয়নি। তবে ইউক্রেনের দাবি, গতকালের বৈঠকে যুদ্ধ বিরতিতে মানবিক করিডরের মাধ্যমে নাগরিকদের নির্বিঘ্নে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং সুরাহাও মিলেছে তাতে। টানা ১৪ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের মাইকোলেভ, লুহানস্ক, মারিওপোল, খারকিভ এই সমস্ত শহরগুলি কার্যত ছায়ের গাদায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু তাতেও রাশিয়ার যুদ্ধ থামানোর কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। গতকাল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইউক্রেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন, কিন্তু তাতেও কোন সুরাহা মেলেনি। অন্যদিকে আজ রাশিয়া ফের যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা করেছে, যাতে যুদ্ধ বিদ্ধস্ত অঞ্চলের মানুষদের নিরাপদে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়।
তবে যুদ্ধ বিরতির মধ্যেই বারবার আক্রমণ করেছে রুশ বাহিনী যার জেরে মৃত্যু হয়েছে সাধারণ নাগরিকদেরও, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেস্কি সাহায্য চেয়েছেন পশ্চিমী দেশ এবং ন্যাটোর কাছেও, অনেকেই ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে ইতিমধ্যেই। ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ নিজেদের হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে রাশিয়াকে পরাস্ত করার জন্য। বলাই বাহুল্য সামরিক দিক দিয়ে রাশিয়ার থেকে অনেকটাই পিছিয়ে ইউক্রেন। তবুও অটুট মনবল, হার মানতে নারাজ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। অপরদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভলাদিমির পুতিনের লক্ষ্য কিভ, তিনি বারবার বলেছেন ইউক্রেন কিয়েভকে রাশিয়ার হাতে তুলে দিলে রাশিয়া যুদ্ধ থেকে সরে আসবে। যুদ্ধ শুরুর পরেই ইউক্রেনের পরমাণু কেন্দ্র ধ্বংস করে দেয় রুশ বাহিনী, এবার ইউক্রেন দাবি করেছে পরমাণু কেন্দ্র ধ্বংস করার পরে এবার রাশিয়ার লক্ষ্য ইউক্রেনের হাইড্রোইলেকট্রিক জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। সুত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, আগামী ১০ই মার্চ দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসার পরিকল্পনা রয়েছে।