#Pravati Sangbad Digital Desk:
ভারতের সুর সম্রাঙ্গী লতা দেবীর পরেই প্রয়াত হলেন আরাক সুর সম্রাঙ্গী। প্রয়াত হলেন 'গীতশ্রী ' সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। মৃত্যু কালে বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। গত মঙ্গলবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা বাংলার সংগীত জগৎ। এর পাশাপাশি শোকস্তব্ধ হয়েছেন মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বছরের শুরুর জানয়ারি মাসের শেষের দিকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ' গীতশ্রী '। পরিবার সূত্রে খবর, জানয়ারি মাসের শেষের দিকে অর্থাৎ ২৬ জানয়ারির রাতে হঠাৎই জ্বর আসে সন্ধ্যা দেবীর। জ্বর বাড়লে চিকিৎসকদের পরামর্শে এস এস কেম হসপিটালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। সেখানে করোনা রিপোর্ট করানো হলে রিপোর্ট পজেটিভ আসে তাঁর।
খবর পেয়ে পরের দিন ২৭ জানয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখা করতে যান তাঁর সঙ্গে। সেখানে চিকিৎসকের সঙ্গে সন্ধ্যা দেবীর স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। পড়ে ডাক্তারের পরামর্শে এস এস কেম থেকে অ্যাপোলো হসপিটালে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী।
গত ৬ ফ্রেব্রুয়ারী মুখ্যমন্ত্রী এক সাক্ষাৎকারে জানান আপাতত স্থিতিশীল সন্ধ্যা দেবীর শরীর।
শেষ রক্ষা আর হলো না। শেষ নিঃশাস ত্যাগ করলেন ' গীতশ্রী ' দীর্ঘ দিনের লড়াই শেষ গত মঙ্গলবার। যা টুইট করে জানান তৃণমুল সাংসদ নেতা শান্তনু সেন।
জন্ম ও শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম :
শাস্ত্রীয় থেকে সিনেমার গান সব জায়গায় সাবলীল ছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তাঁর জন্ম ১৯৩১সালে ৪ঠা অক্টোবর। তিনি বাংলার মেয়ে । তাঁর জন্ম কলকাতার ঢাকুরিয়ায়। ছোট বয়স থেকেই তিনি গান ভালোবাসতেন। সংগীতের তালিম নিয়েছিলেন পন্ডিত সন্তোষকুমার বসু এটি কানন অধ্যাপক চিন্ময় লাহিড়ীর কাছে। পরবর্তী সময়ে গুরু হিসাবে পেয়েছিলেন ওস্তাদ বড়ে আলী খান ও তার পুত্র মুনব্বর খানকে।
দীর্ঘ বছরের সংগীত শিক্ষার পর প্রথম প্লে ব্যাক সিঙ্গিং করেন ১৯৪৮ সালে ' অঞ্জন গড় ' ছবিতে। তারপর 'সজ্জা ', 'সপ্তপদী', 'হারানো সুর' সহ বহু ছবিতে তাঁর গলা শোনা যায়। মোট ১৭ টি হিন্দি ছবিতে প্লে ব্যাক করেন তিনি।
পুরস্কার :
১৯৭১ সালে সেরা মহিলা প্লে ব্যাক সিঙ্গার ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। এছাড়া ১৯৬৫ ও ১৯৭২ সালে মোট দু বার বিএফজেএ অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। ১৯৯৯ সালে তিনি ভারত নির্মাণ লাইফ টাইম এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে "বঙ্গোবিভূষন" সম্মান দেয়। এমনকি পদ্ম পুরস্কারের জনও তাঁর নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল কেন্দ্রের তরফ থেকে। তবে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
তাঁর মৃত্যুতে আবারও মা হারা হলো বাংলার সংগীত জগৎ। কণ্ঠস্বর হারালো বাংলা। তাঁর আত্মার শান্তি কাম্য।