আগামী মাসে আমেরিকা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিতেই তিনি সেদেশে যাচ্ছেন। কিন্তু এরই পাশাপাশি পরিকল্পনা রয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন তিনি। এমনই দাবি এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের।
রাশিয়া থেকে তেল কেনায় ভারতের উপরে বেজায় ক্ষুব্ধ ট্রাম্প। ভারতীয় পণ্যের উপরে ৫০ শতাংশ হারে ট্যারিফ চাপিয়েছেন তিনি। সঙ্গে ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে কটাক্ষও করেছেন। এমনকী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনাও একপ্রকার থমকে গিয়েছে। রাশিয়া থেকে ভারত তেল এবং অস্ত্র কেনায় রুষ্ট ট্রাম্প
পাল্টা তোপ দেগেছে ভারতও। ট্রাম্পের নাম না করে মোদী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বিশ্বের তৃতীয় অর্থনীতির দেশ হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে ভারত। তবে দেশের কৃষকদের স্বার্থ সবার আগে।
এই টানাপড়েনের মাঝে সেপ্টেম্বরে আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন মোদী। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেবেন তিনি। তার পরে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। এমনটাই জানা গিয়েছে। ট্যারিফ আবহে মোদীর আমেরিকা সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তির ভবিষ্যৎও এখন বিশ বাঁও জলে। এহেন পরিস্থিতিতে ‘বন্ধু’ ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর একান্ত বৈঠকে কি বরফ গলবে? আপাতত সেই দিকেই তাকিয়ে ওয়াকিবহাল মহল।
নিউ ইয়র্ক সিটিতে বসছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভাষণের জন্য রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদে ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে স্লট দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২৩ সেপ্টেম্বর বক্তৃতা দেওয়ার কথা রয়েছে।
সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে নিউ ইয়র্কে ভিড় জমাবেন রাষ্ট্রনেতারা। জানা যাচ্ছে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের সভা ২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্ভাব্য সফরের সময়, প্রধানমন্ত্রী মোদী অনেক বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও অংশ নিতে পারেন।
সেই অধিবেশনে যোগ দেওয়ার ফাঁকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনেস্কি-সহ অন্যান্য রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গেও মোদী উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।
তবে নিঃসন্দেহে অন্য বৈঠকগুলির চেয়ে এই মুহূর্তে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠকই যে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ তৈরি করবে তা বলাই বাহুল্য। এর আগে বছরের শুরুতে মার্কিন সফরে গিয়েছিলেন মোদি। সেই সময় ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছিল। সাত মাসের মধ্যে ফের হোয়াইট হাউসে দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠক অবশ্য আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম দফায় মোদির সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব দেখেছিল গোটা বিশ্ব। কিন্তু মসনদে প্রত্যাবর্তন ঘটানোর পর এবার যেন বড় বেশি খামখেয়ালি ট্রাম্প। যার প্রভাব পড়েছে মোদির সঙ্গে তাঁর সম্পর্কেও। যদিও সম্প্রতিও তাঁকে বারবার মোদিকে ‘বন্ধু’ সম্বোধন করেছেন, কিন্তু যেভাবে শুল্ক চাপানো হয়েছে নয়াদিল্লির উপরে তাতে বন্ধুত্বের লক্ষণ যে দৃশ্যমান হয়নি তা বলাই যায়। এমতাবস্থায় সামনাসামনি তাঁদের মধ্যে কী কথা হয় সেদিকেও সকলের চোখ থাকবে। তবে তার আগে ১৫ আগস্ট পুতিন-ট্রাম্প বৈঠকের দিকেও নজর থাকবে ভারতের।