ফ্রান্সের পর মঙ্গলবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার জানালেন, উপযুক্ত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রসংঘের বৈঠকে প্যালেস্টাইনকে রাষ্ট্রের মর্যাদা দেবে ব্রিটেন। তবে এক্ষেত্রে হামাসকেও শর্ত দেওয়া হয়েছে ব্রিটেনের তরফে। জানানো হয়েছে, সেক্ষেত্রে ৭ অক্টোবরে পণবন্দিদের মুক্তি, যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি ও অস্ত্রত্যাগের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে হামাসকে। একইসঙ্গে তাদের জানাতে হবে, গাজার শাসন ব্যবস্থায় তাদের কোনও ভূমিকা থাকবে না। তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল রাশিয়া, সুনামির ধাক্কা পৌঁছল আমেরিকায়
আমরা দ্বিরাষ্ট্র নীতির পক্ষে। তবে তার আগে দুই জাতির মধ্যে চলা সংঘাত প্রশমন করা প্রয়োজন। এপ্রসঙ্গেই স্টারমার বলেন, “ইজরায়েলের সরকার গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতি বদল করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে হবে। না হলে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আগামী সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রসংঘের অধিবেশনে ব্রিটেন প্যালেস্টাইনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।” ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, “আমাদের মূল লক্ষ্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত ইজরায়েলের পাশাপাশি সার্বভৌম প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র। বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এই লক্ষ্য পূরণ করা আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।” এপ্রসঙ্গে হামাসকে অস্ত্র ত্যাগের পাশাপাশি পণবন্দিদের দ্রুত মুক্তি দেওয়ার বার্তা দেন স্টারমার।
যেভাবে গাজার মাটিতে ইজরায়েল নৃশংসতা শুরু করেছে তাতে বিরক্ত ফ্রান্সও। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সেদেশের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক্স হ্যান্ডেলে জানান, গাজার যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। আমজনতাকে বাঁচানো দরকার। তাই আগামী সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় গাজাকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা করবেন ম্যাক্রোঁ। এক্স হ্যান্ডেলে ম্যাক্রোঁ লেখেন, “মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরুক, এটাই চায় ফ্রান্সের জনতা।” আমেরিকা ফ্রান্সের সেই বার্তার বিরোধিতা করলেও এবার সেই পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিল ব্রিটেন।
এদিকে আমেরিকা ও ইজরায়েলের বেঁধে দেওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত মানতে রাজি হয়নি হামাস। সূত্রের খবর, হামাসের দাবি ছিল তেল আভিভের স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি ছাড়া একতরফাভাবে সমস্ত ইজরায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি নয় তারা। হামাসের অভিযোগ, ইজরায়েলকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য মদত দিচ্ছে আমেরিকাই। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই এবার প্যালেস্টাইনের পাশে দাঁড়াল ইউরোপের দুই দেশ ফ্রান্স ও ব্রিটেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে প্রায় ১৫০টি দেশ প্যালেস্টাইনকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে বেশিরভাগ পশ্চিমা শক্তি এখন পর্যন্ত প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতি দেয়নি। এর মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি। এছাড়া এশিয়ার মধ্যে রয়েছে জাপান।
অপরদিকে যেসব দেশ ইজরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না, তাদের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, সিরিয়া এবং ইয়েমেন।
তবে, ফ্রান্স দীর্ঘদিন ধরেই ইজরায়েল ও প্যালেস্টাইনের বিষয়ে আলাদা দুটি রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে মতামত দিয়ে আসছে।