রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কড়া পদক্ষেপে এবার একসঙ্গে ৩টি কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে জারি হল কঠোর নিষেধাজ্ঞা। আগামী ৪ জুলাই ২০২৫ থেকে এই ব্যাঙ্কগুলোর স্বাভাবিক ব্যবসা পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ‘ব্যাঙ্কিং রেগুলেশন অ্যাক্ট, ১৯৪৯’ -এর ৩৫(এ) এবং ৫৬ ধারার আওতায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে —দিল্লির ইনোভেটিভ কো-অপারেটিভ আরবান ব্যাঙ্ক লিমিটেড, গুয়াহাটির দ্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক লিমিটেড, মুম্বইয়ের দ্য ভবানী সহকারি ব্যাঙ্ক লিমিটেড।
এই তিনটি ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের জন্যই পরিস্থিতি বেশ সংকটজনক হয়ে উঠেছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, দিল্লি ও গুয়াহাটির ব্যাঙ্কগুলির ক্ষেত্রে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৩৫,০০০ টাকা পর্যন্ত নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে তুলতে পারবেন। তবে মুম্বইয়ের ভবানী সহকারি ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা একটাকাও তুলতে পারবেন না। এর ফলে বহু মানুষ যাঁদের দৈনন্দিন লেনদেন এই ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে হয়, তাঁরা চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। আরবিআইয়ের নির্দেশ অনুযায়ী, এই তিনটি ব্যাঙ্ক শুধুমাত্র বেতন, অফিস ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ও প্রশাসনিক খরচ চালাতে পারবে। এর বাইরে নতুন ঋণ দেওয়া, আগের ঋণ নবীকরণ, কোনও ধরণের বিনিয়োগ কিংবা সম্পত্তি কেনাবেচার উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক স্পষ্ট জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ স্থায়ী নয়। ৬ মাসের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে এবং পরিস্থিতির উন্নতি হলে ভবিষ্যতে তা প্রত্যাহারও করা হতে পারে। যদিও এই মুহূর্তে ব্যাঙ্কগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা হয়নি। আরবিআইয়ের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু না জানানো হলেও ধারণা করা হচ্ছে, ব্যাঙ্কগুলোর আর্থিক অব্যবস্থাপনা, সঞ্চিত মূলধনের ঘাটতি কিংবা অসুস্থ ঋণপ্রদান নীতি এই ধরনের কঠোর পদক্ষেপের কারণ। এই সিদ্ধান্তে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার গ্রাহক আর্থিক দিক থেকে সংকটের মুখোমুখি হতে চলেছেন। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নজর এখন এই ব্যাঙ্কগুলোর কার্যকলাপ ও পুনর্গঠনের পরিকল্পনার উপর। যত দ্রুত সম্ভব স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিতে চলেছে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা।