বিশ্ব অর্থনীতির মঞ্চে এক বড়সড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে ভারত ও আমেরিকা। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামী ৮ জুলাই স্বাক্ষরিত হবে বহু প্রতীক্ষিত ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, চুক্তির শর্তাবলি নিয়ে ইতিমধ্যেই একমত হয়েছে দু'দেশ।
ভারতের তরফে বাণিজ্য বিভাগের বিশেষ সচিব রাজেশ আগরওয়ালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি ওয়াশিংটনে গিয়ে আলোচনা করে। সূত্রের দাবি, সেই বৈঠকেই অধিকাংশ বিষয়ে সমঝোতা হয়ে যায়। হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যও সেই ইঙ্গিতই দেয়। গত বৃহস্পতিবার ‘বিগ বিউটিফুল ইভেন্ট’ নামে একটি অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, "আমাদের সঙ্গে সবাই চুক্তি করতে চায়। কালই আমরা চিনের সঙ্গে বড়সড় এক চুক্তি সই করেছি। এবার সম্ভবত ভারতের সঙ্গে আরও বড় একটি বাণিজ্য চুক্তি হতে চলেছে।" এই মন্তব্য থেকেই জল্পনা তৈরি হয়, এবং পরে সেই জল্পনাই বাস্তব রূপ পেতে চলেছে বলে স্পষ্ট হয়। উল্লেখযোগ্য, ৯ জুলাই শেষ হচ্ছে ট্রাম্পের ঘোষিত ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্কছাড়ের সময়সীমা। তার ঠিক আগের দিনেই যদি নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তাহলে তা কৌশলগতভাবেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বলা হচ্ছে, ভারত থেকে আমেরিকায় রপ্তানিকৃত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্যে শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে – বস্ত্র, গয়না, চর্মজাত পণ্য, প্লাস্টিক ও কেমিক্যাল, চিংড়ি মাছ, তৈলবীজ ও ফলমূল। পাল্টা, আমেরিকার তরফ থেকেও কিছু পণ্যে ভারতের আমদানি শুল্ক কমানোর অনুরোধ এসেছে, যেমন — ইলেকট্রিক গাড়ি, মদ, ডেয়ারি পণ্য। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, দুই দেশই পরস্পরের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে এবং একটি সমন্বিত তালিকা তৈরি হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর ৮ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে, কোন কোন পণ্যে কতটা করছাড় দেওয়া হচ্ছে।
স্মৃতি মন্ধানার ঐতিহাসিক কীর্তি: তিন ফরম্যাটেই সেঞ্চুরি করে নজির গড়লেন ভারতের অধিনায়ক
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে ‘ট্যারিফ ওয়ার’ বা শুল্কযুদ্ধ শুরু করেন। ভারতীয় পণ্যের উপর তিনি ২৬ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত কর চাপিয়েছিলেন, যদিও পরে সেটি কার্যকর করার সময়সীমা পিছিয়ে দেন। ভারত সেই কর পুরোপুরি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানায়। এবার সেই দাবির অনেকটাই পূরণ হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চুক্তি না শুধু ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন দিগন্ত খুলবে, বরং বৈশ্বিক বাণিজ্যেও ইতিবাচক বার্তা দেবে।আগামী ৮ জুলাই যদি এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তাহলে সেটি হবে ট্রাম্প প্রশাসনের আরেকটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য, এবং ভারতের জন্যও একটি কৌশলগত জয়। বাণিজ্য জগতের নজর এখন টিকে রয়েছে সেই গুরুত্বপূর্ণ তারিখটির দিকেই।