ভারতের অন্যতম শীর্ষ শিক্ষা পর্ষদ সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (CBSE) দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে পরীক্ষার কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার থেকে দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা বছরে দু’বার নেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য পড়ুয়াদের মানসিক চাপ কমানো এবং তাদের শেখার প্রতি মনোযোগ বাড়ানো।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর দুবার দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা আয়োজন করবে CBSE। প্রথম দফার পরীক্ষা হবে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে, যেখানে সব পড়ুয়াদের অংশগ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। দ্বিতীয় দফার পরীক্ষা হবে মে মাসে, যা একেবারেই ঐচ্ছিক। যারা ফেব্রুয়ারির ফলাফলে সন্তুষ্ট নয় বা আরও ভালো ফল করতে চায়, তারা এই দ্বিতীয় পরীক্ষায় বসতে পারবে। এমনকি, যেসব পড়ুয়া সর্বোচ্চ তিনটি বিষয়ে ফেল করেছে, তারাও দ্বিতীয় দফার পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। দুই পরীক্ষার আগে একবার করে ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্ট নেওয়া হবে। এই নতুন পরীক্ষাপদ্ধতি কেবল ভারতেই নয়, CBSE-র আওতায় থাকা বিশ্বের ২৬০টি স্কুলেও চালু হবে।
CBSE জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের শেখার আগ্রহ বজায় রাখার পাশাপাশি পরীক্ষার সময়ের অতিরিক্ত মানসিক চাপ হ্রাস করতেই এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা অনুমোদনের সময় কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, “পড়ুয়াদের উপর যাতে বাড়তি চাপ না পড়ে, সেদিকে নজর রেখেই এই পরিকল্পনা। আমাদের লক্ষ্য পড়ুয়ারা চাপ মুক্ত হয়ে শেখার দিকে বেশি মনোযোগ করে। শিক্ষা মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, “আমাদের মূল উদ্দেশ্য পড়ুয়াদের পরীক্ষা ভীতিকে কাটিয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া। যাতে তারা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে এবং শেখার প্রক্রিয়াটি উপভোগ করে।”
১ জুলাই চিকিৎসক দিবসে রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য অর্ধদিবস ছুটির ঘোষণা, ব্যতিক্রম দুই দপ্তর
উলেখ্য, শিক্ষাব্যবস্থার এই পরিবর্তন দেশের পরীক্ষাকেন্দ্রিক মানসিক চাপের সংস্কৃতি ভাঙার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এতে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের সময় ও প্রস্তুতি অনুযায়ী দ্বিতীয় সুযোগ পাবে, যা পরীক্ষার ফলাফলের উপর অযথা চাপ না দিয়ে শেখার মান উন্নত করতে সাহায্য করবে। CBSE-র এই অভিনব উদ্যোগ শিক্ষাব্যবস্থার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরীক্ষা পদ্ধতিতে এমন নমনীয়তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং তাদের মধ্যে চাপ নয়, শেখার আনন্দ ছড়িয়ে দেবে— এমনটাই আশা অভিভাবক থেকে শুরু করে শিক্ষক মহলের।