Flash News
  1. ভারতের উপর থেকে ট্রাম্প-ট্যারিফ প্রত্যাহারের পথে আমেরিকা
Sunday, September 21, 2025

জোর কদমে চলছে পুরীর রথ উৎসবের প্রস্তুতি

banner

journalist Name : Ananya Dey

#Pravati Sangbad Digital Desk:

সনাতন ধর্মের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল রথযাত্রা। ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে মূলত এই উৎসব বিশেষ উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করা হয়। বিশেষ তিথিতে ধুমধাম করে রথযাত্রার উৎসব পালিত হয় পুরী, মাহেশ, ইস্কনের মন্দিরে। শুধু তাই নয়, যে সমস্ত মন্দিরে ও বনেদি বাড়িতে জগন্নাথ দেব আছে, সেখানেও ঘটা করে পালন করা হয় এই উৎসব। কিছুদিন আগেই পালিত হয়েছে জগন্নাথ মহাপ্রভুর স্নানযাত্রা উৎসব। রথযাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা পুরাণের কথা। স্নান যাত্রার পর নিভৃতবাস থেকে বেড়িয়ে আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রথে চড়ে দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রাকে নিয়ে মাসির বাড়ি যান জগন্নাথদেব। 

এই নিরামিষ খাবারগুলিতে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন আছে যা আপনার শরীরের সুস্থতায় প্রয়োজন

আগামী শুক্রবার রথযাত্রা। এই বিশেষ উৎসবের আগে সেজে উঠছে পুরী। রথযাত্রা উপলক্ষ্যে প্রতি বছরই বহু মানুষ ভিড় করেন পুরীতে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রাচীন এবং মহৎ উৎসব এবার শুরু হবে জুন মাসের ২৭ তারিখে। কথিত আছে, পুরীর রাজা নিজ হাতে তিনটি রথ ঝাঁট দেন—এই প্রথা ‘ছেরা পাহঁরা’  নামে পরিচিত, যা ঈশ্বরের কাছে সমতার বার্তা বহন করে। পুরীর এই রথ টানেন হাজার হাজার ভক্ত, বিশাল কাঠের রথগুলি সরাসরি টেনে নিয়ে যাওয়া হয় শহরের রাজপথ ধরে। রথযাত্রায় জগন্নাথ, বলরাম, শুভদ্রা ছাড়াও তাঁদের সঙ্গে সহযাত্রী হিসেবে থাকেন অন্যান্য দেব-দেবী। জগন্নাথের সঙ্গে থাকেন মদনমোহন, বলরামের সঙ্গে থাকেন রামকৃষ্ণ এবং শুভদ্রার সঙ্গে থাকেন সুদর্শনা। আবার মনে করা হয় দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর কৃষ্ণের বৃন্দাবন প্রত্যাবর্তনের স্মরণে এই উৎসব আয়োজিত হয়ে থাকে। রথযাত্রা উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে মেলার আয়োজন করা হয়। এমনকী পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলে এই উৎসব উপলক্ষে যাত্রাপালাও মঞ্চস্থের রীতি বেশ জনপ্রিয়। রথযাত্রা উপলক্ষে, পুরীর রথে জগন্নাথ মহাপ্রভুর দর্শন হওয়া খুব শুভ বলে বিবেচিত। জগনাথ, শুভদ্রা ও বলভদ্রর জন্য তিনটি রথ তৈরি করা হয়। যা দেখার জন্য প্রতি বছর ভিড় জমান লক্ষ লক্ষ ভক্ত ও দর্শনার্থী। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, কোনও ব্যক্তি যদি রথযাত্রায় পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে অংশ নেন, তাহলে জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্ত হয়ে উঠতে পারেন তিনি। শোনা যায়, শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রথে চড়ে দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রাকে দেখতে যান জগন্নাথদেব। সেই উপলক্ষ্যে ওই তিথি মেনে গুন্ডিচা মন্দিরে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার আয়োজন হয়। এই যাত্রাকে সোজা রথ যাত্রা বলা হয়। এরপর সাত দিন পর মন্দির থেকে দেবতার ফিরতি যাত্রাকে উল্টোরথ যাত্রা বলা হয়। যদিও মাসির বাড়ি যাওয়া নিয়ে রথ যাত্রার আরও এতটি পৌরাণিক কাহিনিও শোনা যায়। তবে জগন্নথধাম পুরী ঘিরে প্রচলিত রয়েছে একাধিক কাহিনি। এই উৎসব শুধু দেব-দেবীর যাত্রা নয়, এটি ভক্তি, ঐক্য, ভালোবাসা ও আত্মিক উৎকর্ষের প্রতীক। দেশের মধ্যে সর্বপ্রাচীন এবং সর্ববৃহৎ রথ যাত্রা আয়োজিত হয় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে। জগতের ‘নাথ’ জগন্নাথ, পুরাণ মতে তিনি জগন্নাথ | কৃষ্ণের অংশ এবং বিষ্ণুর অবতার | কথিত রয়েছে, বদ্রীনাথ ধামে স্নান করেন জগন্নাথ, পোশাক পরেন দ্বারকায়, আর ভোজন সারেন পুরীর ধামে| মহাসমারোহে ছাপ্পান্ন পদে সাজিয়ে দেওয়া হয় ভগবান জগন্নাথের ভোগের থালা| শুধু দেবতা দর্শন নয়, বিশ্বাস সেই ভোগ দর্শনেও মেলে পুণ্য | সারাটা দিন ধরে জগন্নাথ দেবের ভোগ রান্না হয় প্রথা মেনে পুরীর মন্দিরে| তারপর সেই প্রসাদ বিতরণ করা হয় ভক্তদের মধ্যে| উল্লেখ্য, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মজিহি ২২ জুন, রবিবার একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে রথযাত্রার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেন। তিনি নির্দেশ দেন, রথযাত্রাকে সম্পূর্ণভাবে ‘ঘটনাবিহীন’ রাখতে হবে। পুরীর গ্র্যান্ড রোড এবং অন্যান্য সংবেদনশীল এলাকায় ড্রোন, সিসিটিভি ক্যামেরা ও কোস্ট গার্ডের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে। প্রশাসন জানিয়েছে, রথযাত্রার প্রতিটি পর্যায়ে কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। রথযাত্রা উপলক্ষ্যে যাতে ভক্তরা নির্বিঘ্নে পুরী পৌঁছতে পারেন সে কারণে এই সময় ৩৬৫টি বিশেষ ট্রেন চালানো হবে। এই বিশেষ ট্রেনগুলি চলবে ওড়িশার রাউরকেলা, বিরামিত্রপুর, বঙ্গিরিপোসি, জুনাগড় রোড, বদমপাহাড়, বৌধ, জগদলপুর, বালেশ্বর, অনুগুল, গুনুপুর, রায়গড়া-সহ একাধিক এলাকা থেকে। এছাড়াও, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম, ছত্তিশগড়ের গণ্ডিয়া ও পশ্চিমবঙ্গের সাঁতরাগাছি থেকে পুরী পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন পরিষেবা চালু থাকবে মূল রথযাত্রার দিনগুলিতে।

Tags:

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

সংস্কৃতি ঐতিহ্য
Related News