#Pravati Sangbad Digital Desk:
বিগত কিছু মাস ধরে রাজ্য রাজনীতিতে মুকুল রায়ের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা চলছে, আদৌ তিনি বিজেপিতেই রয়েছেন নাকি তৃনমুলে যোগ দিয়েছেন তা অনেকের কাছেই স্পষ্ট নয়। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পরেই তৃণমূলে ফিরে এসেছিলেন মুকুল রায়, ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির টিকিতে নির্বাচনও লড়েন তিনি, কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে জয়ীও হন তিনি, তৃণমূলে যোগদানের পর থেকেই তার বিধায়ক পদ নিয়ে শুরু হয় তরজা। তারপরেই সর্বত্র একটি প্রশ্ন ঘোরাফেরা করতে শুরু করে, দল ত্যাগ করলেও কেন তাকে বিধায়ক পদে রাখা হবে?, এর পরেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দল বিরোধী আইন অনুযায়ী মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন জানান। এই ঘটনার ঠিক পরেই মুকুল রায়কে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চায়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত করা হয়, তাতেই আবারও বিস্ফোরণ ঘটে রাজ্য রাজনীতিতে। গেরুয়া শিবির দাবি তোলে মুকুল রায়কে কীসের ভিত্তিতে পিএসসি এর চেয়ারম্যান করা হল। তবে মুকুল রায়ের দাবি তিনি বিজেপি কোনদিনই ছাড়েননি, অর্থাৎ বঙ্গ রাজনীতিতে মুকুল রায়ের অবস্থান এখনও অধরাই থেকে গেছে।
মুকুল রায়ের পিএসসি চেয়ারম্যান পদের বৈধতাকে কার্যত চ্যালেঞ্জ করে কোলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়, এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মামলার শুনানি হয় সোমবার, আর তাতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই বিধানসভার স্পিকারকেই এই মামলার শেষ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ফের মুকুল রায় মামলার শুনানি হয় বিধানসভায়, মুকুল রায়ের পদ খারিজের আবেদনও করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৮শে জানুয়ারি হবে বলে জানা গিয়েছে। এখন দেখার বিষয় পরবর্তী শুনানিতে বিধানসভার অধ্যক্ষ কি সিদ্ধান্ত নেন।
এদিন শুনানির শেষে মুকুল রায়ের আইনজীবীরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, “ তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির হয়ে লড়েছেন, সুতরাং তিনি বিজেপিতেই ছিনেল এবং এখনও রয়েছেন। সেদিনের সাক্ষাৎ ছিল শুধুমাত্র সৌজন্য সাক্ষাৎ, কোন রকম রাজনৈতিক সাক্ষাৎ ছিল না। গলায় অন্য দলের উত্তরীয় নেওয়ার অর্থ এই নয় যে তিনি নিজের দল ত্যাগ করেছেন।“ চারিদিকে মুকুল রায়ের তৃণমূল যোগের কথা উঠলেও বিজেপির সুখ্যাতি তার গলায় স্পষ্ট হয়েছে বারবার। তাকেও এও বলতে শোনা গেছে, “ বিজেপি মানেই তৃণমূল”। তবে এদিন শুভেন্দু অধিকারির আইনজীবীরা উপস্থিত থাকলেও কোন রকম মন্তব্য করতে শোনা যায়নি তাদের। মুকুল রায়ের স্ত্রীএর অসুস্থতার সময় একাধিক তৃণমূল নেতাদের সাক্ষাতের ছবি সামনে আসেছিল, তবে সেই সমস্ত ঘটনাকে শুধুমাত্র সৌজন্য সাক্ষাৎ বলেছিলেন মুকুল রায়।