#Pravati Sangbad Digital:
এশিয়া কাপ ফাইনালে কখনও মুখোমুখি হয়নি ভারত ও পাকিস্তান। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে প্রথম বার মুখোমুখি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল।
রবিবার টসে হেরে আগে ব্যাট করে পাকিস্তান শেষ হয়ে গিয়েছিল ১৪৭ রানে। জবাবে ভারত পাঁচ উইকেট বাকি থাকতে জয়ের রান তুলে নিয়েছিল। আর তারপরেই ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানের স্মৃতি মনে করিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে শুভেচ্ছা জানালেন নরেন্দ্র মোদী।
পোস্টে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, 'মাঠে অপারেশন সিঁদুর। ফলাফল সবসময় একই হয় - ভারত জিতে যায়। আমাদের ক্রিকেটারদের অভিনন্দন।'
অপারেশন সিঁদুরের সময় পাকিস্তানের অন্তত ৫টি যুদ্ধবিমান লড়াইয়ের সময় ধ্বংস করেছিল ভারত। এছাড়া পাকিস্তানের একটি AWACS বিমান ৩০০ কিমি দূর থেকে ধ্বংস করেছিল ভারত। এছাড়া মাটিতে থাকা একাধিক এফ১৬ যুদ্ধবিমান ভারত ধ্বংস করেছিল। আর অপারেশন সিঁদুরের শুরুতেই পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভারতীয় সামরিক বাহিনী। আর ১০ মে-র ভোরে পাকিস্তানের ১১টি বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে সেগুলিকে অকেজো করে দিয়েছিল ভারত।
যাইহোক, এশিয়া কাপের স্কোয়াডে থাকলেও ম্যাচে সুযোগ পাচ্ছিলেন রিঙ্কু সিং। দুই পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে শিবম দুবে ও হার্দিক পান্ডিয়াকে খেলানো হচ্ছিল। কিন্তু ওই যে, রিঙ্কু সবসময়ই টিমের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মনে করেন নিজেকে। পরিবর্ত ফিল্ডার হিসেবে নামতে হয়েছে। প্রত্যাশিত ভাবেই সর্বস্ব দিয়েছেন। হার্দিক পান্ডিয়ার চোটে সরাসরি ফাইনাল ম্যাচে খেলার সুযোগ। আর তারপর অবিশ্বাস্য অনুভূতির সামনে রিঙ্কু। তিলক ভার্মা ছয় মারেন, এরপর সিঙ্গল নিয়ে স্কোর লেভেল করেন। রিঙ্কু স্ট্রাইক পান। বাউন্ডারি মেরে ম্যাচ ফিনিশ করেন।
টুর্নামেন্টের শুরুতে ভারতীয় ক্রিকেটারদের ব্রডকাস্টারের তরফে ম্যানিফেস্টো জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। সেখানে রিঙ্কু বলেছিলেন, তিনি চাইবেন, খেলার সুযোগ মিলুক এবং উইনিং রান তাঁর ব্য়াটেই আসুক। কাগজে লিখেও দিয়েছিলেন,উইন রান। সেই রান তাঁর ব্যাটেই এল। টুর্নামেন্টে এক বল খেলেই ম্যাচ উইনার রিঙ্কু বলেন, ‘আমাকে ফিনিশার বলা হয়। যখনই সুযোগ পাব, ম্যাচ ফিনিশ করে আসারই চেষ্টা করব।’ উইনিং শট নিয়ে তাঁর দৌড় ছিল দেখার মতো। বিশ্বকাপের দৌড় যেন এখান থেকেই শুরু করে দিলেন টিম ইন্ডিয়ার প্রিয় রিঙ্কু সিং।
জিতল ভারত আর এশিয়া কাপের ট্রফি নিয়ে পালিয়েছে পাকিস্তান!
ভারতের হাতে না দিয়ে এশিয়া কাপ নিয়ে পালালেন পাক ক্রিকেট প্রধান
ফাইনালের পর সাংবাদিক বৈঠকে এসে সূর্য বলেছিলেন, “চ্যাম্পিয়ন দল ট্রফি পাচ্ছে না, ক্রিকেট খেলা শুরু করার পর থেকে জীবনে এমন ঘটনা আমি দেখিনি। তবে আমার মতে দলের ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফেরাই আসল ট্রফি। সকলে বলছেন, ভারত এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন। এটাই আসল কথা।”
এশিয়া কাপ জিতে ট্রফি ছাড়াই উল্লাস করেছেন ভারতীয় ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফেরা। ২০২৪ সালে টি২০ বিশ্বকাপ জিতে রোহিত শর্মা যে কায়দায় ট্রফি তুলেছিলেন, সেই একই কায়দায় উল্লাস করলেন সূর্যেরা।
এদিন ফাইনাল যতটা নাটকীয় হয়েছে, খেলা শেষে নাটক হল তার অনেক বেশি। পুরস্কার বিতরণী পর্ব শুরু হল ঘণ্টাখানেক পর। কারণ গোসাঘরে খিল দেওয়ার মতো ড্রেসিংরুম বন্ধ করে বসেছিলেন সলমল আলি আগা-শাহিন আফ্রিদিরা। ভারতীয় বোর্ডের তরফে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান হলেও পাক বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা সেদেশের মন্ত্রী নকভির হাত থেকে ট্রফি নেবে না টিম ইন্ডিয়া।
গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানকে হারিয়ে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জন্য ভারতীয় সেনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন সূর্য। চ্যাম্পিয়ন হয়ে এশিয়া কাপে নিজের ম্যাচ ফি-র পুরোটাই ভারতীয় সেনাকে দান করতে চলেছেন ভারত অধিনায়ক। উল্লেখ্য, এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতের জয় টেলিভিশনে দেখেছেন সেনা বাহিনীর জওয়ানেরা। ভারত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তাঁদের উল্লাসের ছবিও দেখা গিয়েছে সমাজমাধ্যমে।
ভারতের কুলদীপ যাদব ম্যাচের সেরা ও অভিষেক শর্মা প্রতিযোগিতার সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার পান। তাঁরা পুরস্কার নেওয়ার পর সঞ্চালক ডুল জানান, ভারতীয় দল চ্যাম্পিয়নের ট্রফি নেবে না। এর থেকে স্পষ্ট, নকভিও নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরেননি। অন্য কোনও কর্তাকে তিনি ট্রফি দেওয়ার অনুমতি দেননি। সেই কারণে ভারতীয় দলও নিজেদের দাবি থেকে সরেনি। এই দৃশ্য ক্রিকেটের ইতিহাসে কোনও দিন দেখা যায়নি। একটা বড় প্রতিযোগিতা জিতে জয়ী দল ট্রফিই নিল না। বোঝা যাচ্ছে, এই বিতর্ক এখনই থামবে না। এশিয়া কাপ শেষ হয়ে গেলেও ভারত-পাকিস্তান সংঘাত এখনও চলবে।
সূর্যকুমারেরা ট্রফি নিতে অস্বীকার করায় এশিয়া কাপের ট্রফি ও ভারতীয় ক্রিকেটারদের মেডেল নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন নকভি। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব দেবজিৎ শইকীয়া বলেন, “যেহেতু ভরত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি রয়েছে তাই আমরা এমন কারও কাছ থেকে পুরস্কার নেব না, যিনি পাকিস্তানের মন্ত্রী। নীতিগত ভাবে এই সিদ্ধান্ত আমরা আগেই নিয়েছিলাম। তার মানে এই নয় যে ভদ্রলোক ট্রফি ও মেডেল নিয়ে পালিয়ে যাবেন। এই ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আশা করছি ভদ্রলোক দ্রুত ট্রফি ও মেডেল ভারতে ফেরত দিয়ে দেবেন।”
এশিয়া কাপ ফাইনাল শেষ হওয়ার পরেই শুরু হয়েছিল নাটক। ফাইনাল শেষ হওয়ার পর সকলের নজর ছিল, কার হাত থেকে ট্রফি নেন সূর্যেরা। খেলা শেষ হলেও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছিল না। ভারতীয় ক্রিকেটারেরা মাঠেই দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। শোনা গিয়েছে, ভারত নাকি জানিয়ে দেয়, তারা নকভির কাছ থেকে ট্রফি নেবে না। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে এই একই কথা বলেছিলেন অধিনায়ক সূর্য। কিন্তু মাঠে ছিলেন নকভি। কারও সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেখা যায় তাঁকে। নকভিকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল, বেশ রেগে রয়েছেন তিনি। খেলা শেষ হওয়ার ১ ঘণ্টা পর সাজঘর থেকে বেরিয়ে আসেন পাক ক্রিকেটারেরা। সওয়া ১ ঘণ্টা পর শুরু হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।