#Pravati Sangbad Digital:
পুজোর আনন্দ কিছুটা হলেও বৃষ্টি যে মাটি করতে পারে, সেই আশঙ্কা ছিলই। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস সত্যি করেই প্রতিপদ অর্থাৎ সোমবার রাতে কলকাতায় মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। সূত্রের খবর, ৫ ঘণ্টায় গড়ে ২৫০ মিলিলিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে খবর, যা রেকর্ড। ফলে জলমগ্ন প্রায় গোটা কলকাতা। উত্তর থেকে দক্ষিণ, সর্বত্র জলবন্দি মানুষ। কলকাতার বহু বাড়িতে ঢুকেছে জল। বহু এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। শিয়ালদহে রেলওয়ে ট্র্যাকও জলের নিচে। সেই কারণে শিয়ালদহ থেকে আপাতত পুরোপুরি বন্ধ ট্রেন পরিষেবা। উত্তর শাখায় দমদম থেকে চলাচল করলেও সকাল থেকেই বাতিল বহু ট্রেন। যা চলছে তা-ও অত্যন্ত ধীর গতিতে। মহালয়ার তাৎপর্য শাস্ত্রীয় ভিত্তিতে আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলছে, দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। গত তিন ঘণ্টায় কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় দেখা গিয়েছে মেঘভাঙা বৃষ্টিপাত। সঙ্গী হয়েছে প্রবল বজ্রবিদুৎ। তার সঙ্গে আবার ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে বয়েছে দমকা হাওয়াও। শহরেরই সাত এলাকায় দেখা গিয়েছে প্রবল বৃষ্টিপাত।
প্রবল বৃষ্টিতে যাদবপুর, পার্কসার্কাস, তারাতলা, একবালপুর, ভবানীপুর-সহ সর্বত্র যতদূর চোখ যায় শুধু জল আর জল। মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে বেরনোই কাল হল ফল বিক্রেতা বাবু কুণ্ডুর। জানা যাচ্ছে, এদিন সকালে নেতাজিনগর এলাকা দিয়ে সাইকেলে যাচ্ছিলেন তিনি। কোনও কারণে বিদ্যুতের খুঁটিতে হাত দেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তড়িদাহত হয়ে ছিটকে পড়েন রাস্তায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। একবালপুরে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধের। তাঁর নাম জিতেন্দ্র সিং। অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে এসএসকেএমে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এছাড়াও কালিকাপুর, গড়িয়াহাট, বেনিয়াপুকুর থেকেও মৃত্যুর খবর মিলেছে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী মোট মৃতের সংখ্যা ৭। তবে তা বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বাংলার অদূরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে বঙ্গোপসাগরের বুকে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ। তার প্রভাবেই মঙ্গলে ভাসল দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও কলকাতা সংলগ্ন একাধিক এলাকা। ওই নিম্নচাপের জেরেই জল ভরে মেঘ ভেসে ভেসে ঢুকে পড়ছে বাংলায়। আর তারপরই শুরু হয়ে যাচ্ছে বৃষ্টিপাত। আগামী দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যেই ফের বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে বলেই পূর্বাভাস। ভারতের উপর থেকে ট্রাম্প-ট্যারিফ প্রত্যাহারের পথে আমেরিকা বৃষ্টির জেরে এক দিকে যখন জেরবার হয়েছে শহর কলকাতা, সেই আবহে খুব একটা প্রভাব পড়েনি দক্ষিণবঙ্গের অন্য জেলাগুলিতে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলের এই প্রবল বৃষ্টির সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও শহর কলকাতায়। খানিক প্রভাব পড়েছে সংলগ্ন হাওড়া-হুগলিতেও।