বড়বাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই কলকাতা পুরনিগম (KMC) শহরের সব রুফটপ রেস্তরাঁ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার নির্দেশ জারি করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া বার্তার পর শুক্রবার জরুরি বৈঠকের শেষে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
উলেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে বড়বাজারের মেছুয়া অঞ্চলের ফলপট্টিতে একটি বহুতল হোটেলে আগুন লাগার ঘটনায় প্রাণ হারান ১৪ জন। তদন্তে উঠে আসে, হোটেলের ভিতরে বিপুল পরিমাণ দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। দিঘা সফর কাটিয়ে ফেরার পর মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘটনাটি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে জন্য প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শুক্রবার কলকাতা পুলিশ, দমকল বিভাগ এবং পুরনিগমের মধ্যে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পরই মেয়র ফিরহাদ হাকিম ঘোষণা করেন, “পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শহরের সমস্ত রুফটপ রেস্তরাঁ বন্ধ থাকবে।” তিনি আরও জানান, “ছাদ কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, তা বিক্রি করা বা ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা আইনসিদ্ধ নয়।”মেয়র হাকিম আরও জানান, কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মাকে অনুরোধ করা হয়েছে, শহরের সমস্ত রুফটপ রেস্তরাঁর তালিকা পুরনিগমকে পাঠানোর জন্য। সেই তালিকা অনুসারে প্রতিটি রেস্তরাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে নোটিস পাঠানো হবে। পুরনিগমের এই সিদ্ধান্তে শহরের অসংখ্য রুফটপ রেস্তরাঁ মালিক এবং কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালীন ও পর্যটন মরসুমে এই ধরনের রেস্তরাঁগুলিতে মানুষের ভিড় বেশি হয়, এবং তা শহরের ফুড-ট্যুরিজমের একটি বড় অংশ।
প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, রুফটপ রেস্তরাঁগুলির ফায়ার সেফটি এবং বিল্ডিং কোড মেনে চলার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। পরিকাঠামো ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত মানদণ্ড পূরণ করলে পরবর্তী পর্যায়ে রেস্তরাঁগুলি পুনরায় চালু করার অনুমতি মিলতে পারে। বড়বাজারের দুর্ঘটনার পর কলকাতা শহরে অগ্নিনিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে আলোচনার দরজা খুলেছে। প্রশাসনের এই পদক্ষেপ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, যদিও তাৎক্ষণিকভাবে শহরের হসপিটালিটি ও রেস্তরাঁ শিল্পে বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে।