অক্ষয় তৃতীয়ার পবিত্র দিনে রাজ্যের রাজনৈতিক মঞ্চে বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থাকল দিঘা। সদ্য বিবাহিত বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পাড়ি দিলেন দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদার। পুজো ও মন্দির পরিদর্শনের পরই তিনি মুখোমুখি হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। রাজনৈতিক মতভেদ ছাপিয়ে এ এক সৌজন্যের নিদর্শন, যা রাজনীতির উত্তাল সময়ে এক নতুন বার্তা দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
উলেখ্য, জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের দিন সকাল থেকেই উৎসবের আমেজে ছিল সমুদ্র শহর দিঘা। বহু প্রতীক্ষিত এই মন্দিরটির দ্বারোদ্ঘাটন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অক্ষয় তৃতীয়ার শুভক্ষণে। বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ মন্দিরে পৌঁছন দিলীপ ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী। তাঁদের অভ্যর্থনা জানান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। চার নম্বর গেট দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করে জগন্নাথদেবের দর্শন ও পুজো সারেন তাঁরা। পরে মন্দির লাগোয়া অতিথি নিবাসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান দিলীপ ও রিঙ্কু। জানা যায়, অত্যন্ত খোশমেজাজে হয় তাঁদের আলাপচারিতা। মন্দির নির্মাণ, আবহাওয়া, সাম্প্রতিক বৃষ্টি—সব কিছু নিয়েই কথাবার্তা হয় দুই রাজনৈতিক নেতার মধ্যে। দিলীপ ঘোষ জানান, জগন্নাথ মন্দিরের সৌন্দর্য ও পরিকাঠামো তাঁকে অভিভূত করেছে এবং সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে।
দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে উৎসবের আবহ
জানা গেছে, এই মন্দির দর্শনের আমন্ত্রণ নিজে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাওড়ার শ্যামপুরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর দিঘা যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন দিলীপ ঘোষ, যা পরে বাস্তবায়িত হয়। তবে দিলীপ ঘোষের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দলীয় অন্দরে দেখা দিয়েছে মতবিরোধ। বিজেপির বর্তমান রাজ্য নেতৃত্ব—সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরা—তাঁর এই ‘সৌজন্যমূলক’ সাক্ষাৎকে ভালো চোখে দেখছেন না বলে সূত্রের খবর। বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ দিলীপকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি। প্রসঙ্গত, ১৮ এপ্রিল রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন দিলীপ ঘোষ। সল্টলেকের নিজ বাড়িতে আইনি ও বৈদিক মতে সম্পন্ন হয় বিবাহ অনুষ্ঠান। সেদিনও তাঁকে শুভেচ্ছা পাঠান মুখ্যমন্ত্রী, যদিও সাক্ষাৎ হয়নি তাঁদের। এই প্রথমবার পরস্পরের মুখোমুখি হলেন তাঁরা বিয়ের পর। রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যেও এমন সৌজন্যের সাক্ষাৎ বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক ব্যতিক্রমী মুহূর্ত বলেই মনে করছেন অনেকে।