প্রায় পাঁচ মাস দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে জামিন পেলেন বাংলাদেশে ইসকনের সন্ন্যাসী ও সম্মিলিত সনাতনী জাগরণী জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, যিনি চিন্ময় প্রভু নামে অধিক পরিচিত। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকার হাইকোর্টের বিচারপতি আতোয়ার রহমান খান ও আলি রেজার ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। তবে জামিন সত্ত্বেও তাঁর জেলমুক্তি এখনো নিশ্চিত নয়।
উলেখ্য, ২০২৪ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। আইনজীবীদের একাধিকবার চেষ্টা সত্ত্বেও চট্টগ্রামের নিম্ন আদালত ও পরবর্তীতে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন খারিজ হয়। এমনকি শুনানির সময় চিন্ময় প্রভুর আইনজীবীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে। চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে জানান, “জামিনের এই আদেশ নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে এখনই চিন্ময় প্রভুর জেল থেকে মুক্তি মিলবে কি না, তা বলা যাচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন, সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট চাইলে হাইকোর্টের জামিনাদেশে স্থগিতাদেশ জারি করতে পারে, যা চিন্ময় প্রভুর মুক্তি নিয়ে নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে মামলা এবং জামিনপ্রক্রিয়ার জটিলতাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশসহ পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু সমাজে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। বাংলাদেশে একাধিকবার প্রতিবাদ মিছিল, মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়, আর পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার ও মিছিলের মাধ্যমে চিন্ময় প্রভুর মুক্তির দাবি তোলা হয়। অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন, “হিন্দু সন্ন্যাসী বলেই তাঁকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার করা হয়েছে।”
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর যুদ্ধের আশঙ্কা, আতঙ্কে পাকিস্তান
প্রসঙ্গত, চিন্ময় প্রভুর জামিন আদায়ের জন্য আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ নিজেও একাধিকবার ভারতে গিয়ে জনমত গঠনের চেষ্টা করেন। তাঁর দৃঢ় মনোভাব ও দীর্ঘদিনের আইনি সংগ্রাম অবশেষে ফলপ্রসূ হলো। তবে এখনো পর্যন্ত চিন্ময় প্রভু চট্টগ্রামের কারাগারে বন্দি রয়েছেন, এবং তাঁর মুক্তি নির্ভর করছে উচ্চতর আদালতের পরবর্তী সিদ্ধান্তের উপর। বাংলাদেশের সনাতনী হিন্দু সমাজ এই রায়কে আংশিক বিজয় হিসেবে দেখলেও পূর্ণ ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে বলেই জানিয়েছে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণী জোট।