পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিতস্তা নদীর জল হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায়। অভিযোগ উঠেছে, কোনও রকম পূর্বঘোষণা ছাড়াই ভারতের উরি বাঁধ থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়া হয়েছে, যার ফলে মুজাফ্ফরাবাদ, হাট্টিয়ান বালা ও চাকোটির মতো অঞ্চলে নদী উপচে পড়েছে এবং বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় প্রশাসন জরুরি অবস্থা জারি করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার রাত থেকে আচমকাই নদীর জলস্তর বেড়ে যেতে শুরু করে। প্রশাসনের তরফে মাইকিং করে নদীতীরবর্তী মানুষদের তৎক্ষণাৎ নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু অনেকেই প্রস্তুতির সুযোগ পাননি। বহু মানুষ গৃহহীন হয়েছেন, চাষের জমি এবং ফসল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রামবাসী মহম্মদ আসিফ জানান, “আমাদের কাছে আগে থেকে কোনও খবর ছিল না, কোনও সতর্কতা মেলেনি। আচমকা জল বাড়তে শুরু করে, প্রাণ বাঁচাতে যা পেয়েছি তা নিয়েই বেরিয়ে পড়েছি।” পাকিস্তান সরকার এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে একে ‘জল সন্ত্রাস’ বলে উল্লেখ করেছে। তাদের দাবি, ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী, কোনও দেশ যদি বাঁধের জল ছাড়ে, তা হলে অপর পক্ষকে নির্দিষ্ট সময় আগে তা জানানো বাধ্যতামূলক। পাকিস্তানের অভিযোগ, ভারত কোনও রকম পূর্বসতর্কতা না দিয়েই উরি বাঁধের জল ছেড়েছে।তবে ভারত এখনও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। কোনও বক্তব্য না দিলেও কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বাঁধের জল ছাড়ার মধ্যে ‘অস্বাভাবিক’ কিছু নেই এবং এটি নিয়ম মেনেই করা হয়েছে।
৩২তম কোপা দেল রে জয়ে বার্সেলোনা, নাটকীয় এল ক্লাসিকোয় রিয়ালকে হারাল ৩-২ ব্যবধানে
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কিছুদিন আগেই ভারতের তরফে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যার পেছনে কারণ ছিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলা। সেই প্রেক্ষাপটে ভারত হয়তো নিজেকে আর চুক্তির বাধ্যবাধকতার মধ্যে মনে করছে না। তবে চুক্তি স্থগিত থাকলেও আন্তর্জাতিকভাবে এই ধরনের পদক্ষেপ উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। বর্তমানে কোহালা, ঢালকোটসহ বিভিন্ন নিচু এলাকায় কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নদীর জলস্তর এখনও বিপদসীমার উপর রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের আশঙ্কা, পরবর্তী কয়েক দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। এই ঘটনায় উপত্যকাজুড়ে উদ্বেগ ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলের নজর এখন এই অঞ্চলের দিকে—ভারতের পদক্ষেপ কি কূটনৈতিক অস্থিরতা ডেকে আনবে? নাকি এটি শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগেরই ফল?