কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলার দায় এবার ঘুরিয়ে ভারতের উপর চাপানোর চেষ্টা করল কুখ্যাত লস্কর-ই-তইবা কমান্ডার সইফুল্লা। নয়াদিল্লির দাবি, পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন টিআরএফ (TRF)-এর সদস্যরা এই ‘টার্গেট কিলিং’-এ জড়িত। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, হামলার পুরো ছক কষেছিল সইফুল্লা নিজেই। অথচ, হামলার দায় অস্বীকার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বার্তায় বিস্ফোরক দাবি করেছে এই জঙ্গিনেতা।
উলেখ্য, ভিডিওতে সইফুল্লা খালিদ ওরফে সইফুল্লা কাসুরি বলেন, “জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করি আমরা। এই হামলার অজুহাতে ভারতীয় মিডিয়া আমাকে ও পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেছে। এটা দুঃখজনক। ভারতই কাশ্মীরে ১০ লক্ষ সেনা পাঠিয়ে যুদ্ধের পরিবেশ তৈরি করেছে এবং তারাই হামলা চালিয়েছে। এটা তাদের ষড়যন্ত্র।”পহেলগাঁও হামলায় ২৬ জন নিরীহ পর্যটক প্রাণ হারান। গোয়েন্দাদের দাবি, টিআরএফ-এর নাম ব্যবহার করলেও পুরো পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনা এসেছিল লস্কর-ই-তইবা ঘনিষ্ঠ সইফুল্লার কাছ থেকে। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের কাঙ্গলপুরে পাক সেনার এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে দেখা গিয়েছিল তাকে, যেখানে সে প্রকাশ্যে ভারত বিরোধী বার্তা দেয় এবং কাশ্মীর দখলের ডাক দেয়। এই ঘটনার পরই নয়াদিল্লি কার্যত কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা স্তরে কড়া অবস্থান নেয়। বুধবার বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি জানান,
সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ভারতে অবস্থানকারী সমস্ত পাকিস্তানিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ।
পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনারকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত।
পহেলগাঁও হামলার নেপথ্যে লস্কর-ই-তৈবার ‘মাস্টারমাইন্ড’ সইফুল্লা কসৌরি, দায় স্বীকার TRF
বিশ্লেষকদের মতে, সইফুল্লার এই অস্বীকারমূলক ভিডিও আসলে পাকিস্তান ও লস্করের দায় এড়ানোর প্রচেষ্টা। ভারত ও আন্তর্জাতিক মহলে চাপ এড়াতেই তারা ‘ফলস ফ্ল্যাগ’ অপারেশনের অভিযোগ তুলে পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করতে চাইছে। তবে গোয়েন্দা তথ্য ও ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণে পরিষ্কার, এই হামলার পেছনে ছিল পাকিস্তান-প্ররোচিত জঙ্গিদেরই সুপরিকল্পিত ছক। সইফুল্লার দাবি যতই নাটকীয় হোক না কেন, গোয়েন্দা রিপোর্ট, সাক্ষ্য ও কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট—পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গিদের হাতেই রচিত হয়েছে এই রক্তাক্ত অধ্যায়। আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের এই জোরালো পদক্ষেপ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিরই প্রতিফলন।