মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে এবার সরব হল বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও প্রভাবশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচার এবং শক্তি মন্ত্রকের মতো একাধিক দপ্তরের বিরুদ্ধে ফেডারাল আদালতে মামলা দায়ের করেছে হার্ভার্ড। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ, বেআইনিভাবে ২০০ কোটি ডলারের অনুদান বন্ধ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। শুধু তাই নয়, আরও বেশ কিছু কঠিন নিষেধাজ্ঞা চাপানোর হুমকিও দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
উলেখ্য, সোমবার বস্টনের ফেডারাল কোর্টে মামলা দায়েরের সময় হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট **অ্যালান গারবার** সাফ জানান, “সরকারের বেআইনি ও একচেটিয়া সিদ্ধান্তে আমরা মেনে নিতে পারি না। হার্ভার্ডকে রাজনৈতিক চাপের মুখে ফেলা হচ্ছে, কিন্তু আমরা কোনও অবস্থাতেই আত্মসমর্পণ করব না।”হার্ভার্ডের তরফে জানানো হয়েছে, মার্কিন সংবিধান অনুসারে যে সব সংস্থা জনস্বার্থে কাজ করে, তাদের কর ছাড়ের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরেই হার্ভার্ড এই তকমার আওতায় ছিল। কিন্তু সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থানকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প প্রশাসন তাদের ‘রাজনৈতিক সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করে। এর ফলে হার্ভার্ডকে করছাড় থেকে বঞ্চিত করা হতে পারে এবং নতুন করে কর আরোপের পরিকল্পনাও করছে সরকার। এছাড়াও বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে হার্ভার্ডের নীতির বিরুদ্ধেও প্রশাসনের আপত্তি উঠেছে। হুমকি দেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতে হয়তো বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার অধিকার হারাতে পারে হার্ভার্ড। ইতিমধ্যে কিছু শিক্ষার্থীকে আমেরিকা ছাড়তেও বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারি অনুদান বন্ধ হওয়া এবং অন্যান্য হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি শুধুমাত্র হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে নয়, গোটা উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার ওপর আঘাত। প্রেসিডেন্ট গারবার বলেন, “এই পদক্ষেপ শিক্ষাব্যবস্থাকে রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত করার চেষ্টা। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের আইন ও মূল্যবোধের পক্ষে লড়াই করব।”
পোপ ফ্রান্সিসের প্রয়াণে বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া, ভারত জুড়ে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য স্পষ্ট। হার্ভার্ড নানা সময়ে অভিবাসন, নাগরিক অধিকার ও পরিবেশ সংক্রান্ত ইস্যুতে সরকারের বিরোধিতা করেছে। এই প্রেক্ষাপটে সরকারি অনুদান বন্ধ করাকে অনেকেই প্রতিহিংসামূলক বলেই মনে করছেন।হার্ভার্ডের আইনি লড়াই কোন দিকে গড়াবে, তা এখন আদালতের ওপর নির্ভর করছে। তবে এই মামলা মার্কিন শিক্ষাব্যবস্থায় নজিরবিহীন একটি ঘটনা হিসেবে ইতিমধ্যেই চর্চার কেন্দ্রে উঠে এসেছে।