গাজ়ায় প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থামানোর কোনও ইঙ্গিতই নেই ইজ়রায়েলের পক্ষ থেকে। শনিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানান, হামাসকে সম্পূর্ণভাবে ক্ষমতা থেকে উৎখাত না করা পর্যন্ত গাজ়ায় সেনা অভিযান জারি থাকবে।
নেতানিয়াহু তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমি খুনিদের কাছে আত্মসমর্পণ করব না। যদি আমরা তাদের দাবির কাছে মাথানত করি তবে, আমাদের অর্জিত সব কৃতিত্ব হারিয়ে যাবে।”তিনি আরও যোগ করেন, “গাজ়ায় হামাসকে ক্ষমতা ছেড়ে দিলে, তা ইজ়রায়েলের কাছে এক বড় পরাজয় হবে এবং ইরানের জন্য এক বড় জয়।”গাজ়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৪৮ ঘণ্টায় ইজ়রায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৯০ জনেরও বেশি মানুষ, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন নারী ও শিশুরাও। রাফা ও খান ইউনিসের মতো শহরে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বহু ঘরবাড়ি। আশ্রয়শিবিরগুলিতেও নিরাপদ নন সাধারণ মানুষ। ইজ়রায়েল মানবিক সাহায্য পৌঁছনোর পথ বন্ধ করে রাখায়, খাবার, জল ও চিকিৎসার মতো ন্যূনতম চাহিদাও মেটানো যাচ্ছে না। গত সপ্তাহে ইজ়রায়েল একটি নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাস যদি অন্তত ১০ জন ইজ়রায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দেয়, তবে বিনিময়ে কয়েকশো প্যালেস্টাইনি বন্দিকে মুক্তি দেবে ইজ়রায়েল, এবং আগামী ৪৫ দিনের জন্য গাজ়ায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
উলেখ্য, হামাস এই প্রস্তাবে সম্মতি জানালেও, পাল্টা দাবি তোলে—গাজ়া থেকে পাকাপাকি ভাবে ইজ়রায়েলি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে, প্যালেস্টাইনি বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে এবং গাজ়া পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে ইজ়রায়েলকে। সেইসঙ্গে হামাস চায় একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি। তবে শনিবার নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, এই শর্তাবলিকে ‘আত্মসমর্পণ’ হিসেবে দেখছে ইজ়রায়েল এবং কোনও অবস্থাতেই তা মেনে নেওয়া হবে না।৭ অক্টোবর ২০২৩-এ হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকেই গাজ়ায় পূর্ণমাত্রায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। শুরুতে উত্তর গাজ়া ফাঁকা করানোর পর এবার আক্রমণের পরিসর ছড়িয়েছে মধ্য ও দক্ষিণ গাজ়ায়ও। আকাশপথ এবং স্থলপথে চলছে টানা বোমাবর্ষণ। দিন দিন বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা।
শ্রীমদ্ভগবত গীতা ও নাট্যশাস্ত্র ইউনেস্কোর ‘মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত
প্রসঙ্গত, বিশ্ব সম্প্রদায় ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও, ইজ়রায়েল তাদের অবস্থান থেকে সরতে রাজি নয় বলেই স্পষ্ট করছে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। একইসঙ্গে ইরানকেও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার থেকে বিরত থাকার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতানিয়াহু। বর্তমান পরিস্থিতিতে, গাজ়ায় এক তরফা হামলা বন্ধের কোনও লক্ষণ নেই। বরং ভবিষ্যতে সংঘাত আরও দীর্ঘায়িত ও রক্তক্ষয়ী হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।