প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। সংসদের ভিতরে এবং বাইরে লাগাতার আন্দোলনে শামিল হয়েছেন তৃণমূলের সাংসদরা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবাদের সুর। বিশেষত মুর্শিদাবাদ, মালদহ, সুতি, সামশেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানের মতো এলাকায় বিক্ষোভ তীব্র আকার নিয়েছে। কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে অশান্তি, ঘটেছে সংঘর্ষ, প্রাণহানিও ঘটেছে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই আজ, বুধবার, কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত হচ্ছে এক গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সভায় রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। থাকবেন ইমাম, মোয়াজ্জেম, সমাজকর্মী এবং সংখ্যালঘু সমাজের বিশিষ্টজনেরা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে ওয়াকফ আইন নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
উলেখ্য, ওয়াকফ সংশোধনী আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের সংখ্যালঘু সমাজের একাংশের মধ্যে তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ‘গা-জোয়ারি’ করার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। দলের দাবি, সংসদে কোনওরকম আলোচনার সুযোগ না দিয়েই, মধ্যরাতে এই বিল পাশ করানো হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির পরিপন্থী। এদিকে পরিস্থিতি যাতে আরও উত্তপ্ত না হয়, তার জন্য শান্তির বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবরের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সংখ্যালঘুদের বলছি, আপনাদের ওয়াকফ নিয়ে দুঃখ হয়েছে বুঝতে পারছি। আপনারা সবাই একসঙ্গে বাঁচার কথা বলুন। কেউ কেউ রাজনৈতিক প্ররোচনা দেয়। আমি বলছি, ‘দিদি’ আছে আপনাদের। দিদি আপনাদের রক্ষা করবে। আপনাদের প্রপার্টি রক্ষা করবে। কেউ উস্কানিতে পা দেবেন না।”এই বৈঠকের পরিকল্পনা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার আগেই করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে রাজ্যের প্রেক্ষাপটে এই সম্মেলনের তাৎপর্য আরও অনেকটাই বেড়ে গেছে। মুখ্যমন্ত্রীর আজকের বার্তার দিকে তাকিয়ে গোটা রাজ্য। কারণ এই বক্তব্য থেকেই পরবর্তী রাজনৈতিক রূপরেখা ও প্রশাসনিক অবস্থান স্পষ্ট হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
অন্যদিকে, বিজেপির তরফ থেকেও পাল্টা কর্মসূচির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, আগামী ২০ এপ্রিল থেকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ওয়াকফ সংশোধনী আইনের পক্ষে জনমত গঠনে রাজ্যে নামছে। তৃণমূল যেখানে আইনটিকে মুসলিম সম্প্রদায়ের সম্পত্তি অধিকার খর্ব করার চেষ্টা বলে ব্যাখ্যা করছে, বিজেপি সেখানে আইনটির স্বচ্ছতা ও দুর্নীতির রাশ টানার প্রয়াস হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। ওয়াকফ ইস্যুকে কেন্দ্র করে রাজ্য-রাজনীতিতে নতুন করে তৈরি হয়েছে সংঘর্ষের মাটি। এই প্রেক্ষাপটে আজকের নেতাজি ইন্ডোরের সভা শুধুমাত্র প্রশাসনিক নয়, রাজনৈতিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে