২০০৮ সালের ১১ নভেম্বর মুম্বই মলার মূল অভিযুক্ত ও ষড়যন্ত্রকারী তাহাউর রানা এখন ভারতের হেফাজতে

banner

journalist Name : Bidisha Karmakar

#Pravati Sangbad Digital Desk :

২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর, ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলা। মুম্বইয়ের তাজ হোটেল সহ একাধিক জায়গায় চালানো সেই প্রাণঘাতী হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৬৬ জন নিরপরাধ মানুষ। এই হামলার মূল চক্রীদের একজন, পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত তাহাউর রানা, দীর্ঘদিন ধরে ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেলবন্দি। বহু বছর ধরে ভারত সরকার তাঁর প্রত্যর্পণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে এসেছে। অবশেষে সেই প্রচেষ্টাই সফল হল।


উলেখ্য,  বুধবার সন্ধ্যায়, ভারতের তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র একটি বিশেষ দল আমেরিকা থেকে রানাকে নিয়ে রওনা দিয়েছে ভারতের উদ্দেশ্যে। দিল্লিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের অবতরণ করার কথা। ভারতে পা রাখার পরপরই এনআইএ তাঁকে অফিসিয়ালি গ্রেফতার করবে এবং তিহাড় জেলে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই রাখা হবে রানাকে, যার জন্য ইতিমধ্যেই বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাহাউর রানার বিরুদ্ধে এনআইএ-র বিশেষ আদালতে শুনানি হবে দিল্লিতেই। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই তাঁকে মুম্বইয়ে না নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ, মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষে আদালত ছুটি থাকায়, যদি তাঁকে পেশ করাও হয়, সেটাও হবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। একান্তই সশরীরে পেশের প্রয়োজন পড়লে, বিচারকের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হতে পারে রানাকে। তাহাউর রানার ভূমিকা ছিল ভয়ঙ্করভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ২৬/১১ হামলার মাস্টারমাইন্ড ডেভিড হেডলিকে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নথি দিয়ে সাহায্য করেছিলেন তিনিই। হামলার আগে মুম্বইয়ে ‘রেইকি’ করতে এসেছিলেন রানা। ২০০৮ সালের ১১ থেকে ২১ নভেম্বরের মধ্যে তিনি ছিলেন মুম্বইয়ে, এবং থাকাকালীন পাওয়াইয়ের রেনেসাঁ হোটেল থেকে পুরো হামলার ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করা হয়। সেই সফরের সময়েই তাঁর সন্দেহজনক কার্যকলাপ গোয়েন্দাদের নজরে আসে। যদিও এই ঘটনায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী ১০ জন জঙ্গির মধ্যে মাত্র একজন—আজমল কাসব—বেঁচে ধরা পড়েছিল, যার পরবর্তীতে বিচার হয় এবং ফাঁসির সাজা কার্যকর করা হয়। কিন্তু তাহাউর রানা তখনই ধরা পড়েনি। তিনি পরে আমেরিকায় গ্রেফতার হন এবং দীর্ঘ সময় ধরে সেখানে জেল খাটেন। কিন্তু ভারত তাঁকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়ে এক ইঞ্চিও পিছু হটেনি।

১০০ দিনের প্রকল্পে বকেয়া টাকা কবে? কলকাতা হাই কোর্টের কড়া প্রশ্ন কেন্দ্রকে

প্রসঙ্গত,  চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেই প্রত্যর্পণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয় যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়ে দেন, রানা-কে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে। রানা সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানালেও, আদালত তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়। এই প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপেই কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও প্রতি মুহূর্তে বিষয়টির আপডেট নিচ্ছে। এখন গোটা দেশের নজর থাকবে এনআইএ-র তদন্তে ও আদালতের পরবর্তী পদক্ষেপে। ২৬/১১-র ভয়াবহ স্মৃতি আজও তাজা, আর সেই ঘটনার এক অন্যতম পরিকল্পনাকারীর বিরুদ্ধে আইনত পদক্ষেপ যে শুরু হতে চলেছে, তা নিঃসন্দেহে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে একটি বড় মাইলফলক।

Tags:

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Related News