Flash News
  1. ভারতের উপর থেকে ট্রাম্প-ট্যারিফ প্রত্যাহারের পথে আমেরিকা
Sunday, September 21, 2025

মধ্যপ্রাচ্যে আগুন: ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ কোথায় নিয়ে যাবে বিশ্বকে?

banner

journalist Name : Ananya Dey

#Pravati Sangbad Digital Desk:

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ইতিহাস ও বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতি - ২০২৫ সালের জুন মাসে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে দীর্ঘদিনের সংঘাত অবশেষে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের রূপ নেয়। চলছে সরাসরি আঘাত এবং প্রত্যাঘাত। ইরান এবং ইজরায়েলের দ্বন্দ্ব বিশ্ব রাজনীতিকে উত্তাল করে চলেছে। ইসরায়েল “অপারেশন রাইজিং লায়ন’’ নামে একটি সুপরিকল্পিত ও বৃহৎ সামরিক অভিযান শুরু করে। লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা, আইআরজিসি সদর দফতর ও ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি। ইসরায়েলের বোমা হামলায় ইরানে এখন পর্যন্ত ২২৪ জন নিহত ও প্রায় ১,৩০০ জন আহত হয়েছেন। ইরান পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে কমপক্ষে ৪ জন নিহত হয়েছে এবং অনেকে আহত হয়েছে| যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্ভাব্য শান্তি আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন, তবে একইসঙ্গে আমেরিকার সরাসরি জড়িত হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি। মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধের সম্ভাব্য কূটনৈতিক সমাধানের ইঙ্গিত দিলেও একই সঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন। রাশিয়া, চীন এবং আরব লিগ দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুদ্ধটি আরও দীর্ঘায়িত হলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে, বিশেষ করে লেবানন, ইরাক ও ইয়েমেনে।

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিকে লক্ষ্য করে ইজরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ চালু হওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির মঞ্চে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে।

১৯৭৯ সালের ইরান বিপ্লব- ইসরায়েল-ইরান সম্পর্কের উত্তেজনার সূচনা হয় ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর, যখন ইরান সরকার ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার ঘোষণা দেয় এবং সম্পর্ক ছিন্ন করে। গত কয়েক দশকে ইরান ও ইসরায়েল একে অপরের বিরুদ্ধে সাইবার আক্রমণ, গুপ্তহত্যা এবং অন্যান্য গোপন অভিযান পরিচালনা করেছে। ইসরায়েল অভিযোগ করে আসছে যে, ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে এবং হেজবোল্লাহ ও হামাসকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করছে| ইসরায়েল বহু বছর ধরে ইরানের পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যার মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঠেকানোর চেষ্টা করেছে। ইরান হেজবোল্লাহ, হামাস ও ইয়েমেনের হুতি মিলিশিয়াদের মাধ্যমে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একাধিক ছায়াযুদ্ধে লিপ্ত থেকেছে।১ এপ্রিল ২০২৪: ইসরায়েল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালায়, একজন জ্যেষ্ঠ আইআরজিসি কমান্ডার নিহত হন। ১৩ এপ্রিল ২০২৪: ইরান ইসরায়েলে ৩০০টিরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে—এই প্রথমবার ইরান সরাসরি ইসরায়েলে হামলা করে। ৩১ জুলাই ২০২৪: হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহকে তেহরানে হত্যা করা হয়। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪: বৈরুতে এক ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় হেজবোল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ ও এক ইরানি জেনারেল নিহত হন। অক্টোবর ২০২৪: ইরান ইসরায়েলে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায়।


মধ‍্যপ্রাচ‍্যের দুই দেশ ইরান এবং ইজরায়েলের সংঘাত চরমে। একের পর এক বোমা বর্ষণ, ক্ষেপনাস্ত্র হামলার পর কী এবার দুই দেশ পারমানবিক সংঘাতের দিকে এগোচ্ছে? ইজরায়েলের সেনার মুখপাত্র মাশা মিশেলসনের দাবি, ‘‘ইরান পারমানবিক সংঘাতের কাছাকাছি।‘’ ইরানের দুই দিনের মিসাইল হামলার উল্লেখ করে করে তিনি বলেন, ‘‘অনেক কাজ এখনও বাকি আছে। ইরান শুধু ইসরায়েলের জন্য হুমকি নয়, ইউরোপ এবং অন্যান্য দেশের জন্যও। তারা বেসামরিক এলাকায় আঘাত হেনেছে, যেখানে ১৩ জন ইসরায়েলি তাদের জীবন হারিয়েছে’। ‘‘ইরান শুধু ইজরায়েলের সমস্যা নয়, তারা এমন রকেট তৈরি করছে যা ইউরোপে পৌঁছাতে পারে’ , জানান তিনি। বর্তমান ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ শুধু দুই দেশের জন্য নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বের জন্য এক নতুন বিপদের বার্তা বয়ে এনেছে। পারমাণবিক কর্মসূচি, ধর্মীয় রাজনীতি, আঞ্চলিক কর্তৃত্ব—সব মিলে এই সংঘাত ক্রমেই একটি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এখনই শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা না নিলে ভবিষ্যতের জন্য তা ভয়ংকর হয়ে দাঁড়াতে পারে।

 

 

Related News