Flash News
  1. ভারতের উপর থেকে ট্রাম্প-ট্যারিফ প্রত্যাহারের পথে আমেরিকা
Monday, September 22, 2025

ভারতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে দুই ধাপে জনগণনা: শুরু ২০২৬ থেকে, প্রথমবার অন্তর্ভুক্ত জাতিগত গণনাও

banner

journalist Name : Bidisha Karmakar

#Pravati Sangbad Digital Desk :

অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করল দেশের পরবর্তী জনগণনার সময়সূচি। ডিজিটাল পদ্ধতিতে দুই ধাপে আয়োজিত হবে এই বিশাল কর্মযজ্ঞ। ২০১১ সালের পর এই প্রথমবার হতে চলেছে ভারতীয় জনগণনা, যা ২০২১ সালে হওয়ার কথা থাকলেও করোনা অতিমারির কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী ২০২৬ সালের ১ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে প্রথম দফার জনগণনা শুরু হবে। এই ধাপে অন্তর্ভুক্ত থাকবে লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের মতো তুলনামূলকভাবে কম জনবসতিপূর্ণ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। এরপর দ্বিতীয় দফা শুরু হবে ২০২৭ সালের ১ মার্চ মধ্যরাত থেকে, যেখানে দেশের বাকি সমস্ত রাজ্যে ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে চলবে জনগণনার কাজ।

জনগণনা হবে মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত:

1. হাউসলিস্টিং অপারেশন (House Listing Operation - HLO):  প্রথম ধাপে পরিবারভিত্তিক আয়, সম্পত্তির পরিমাণ, বসবাসের অবস্থা, গৃহস্থালির সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। একটি পরিবারের মৌলিক কাঠামো বোঝার জন্য এই তথ্য জরুরি।

2. পপুলেশন এনুমেরেশন (Population Enumeration): দ্বিতীয় ধাপে প্রতিটি পরিবারের প্রতিটি সদস্যের ব্যক্তিগত, আর্থ-সামাজিক ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে। বয়স, লিঙ্গ, শিক্ষা, পেশা, জন্মস্থান প্রভৃতি বিষয় থাকছে এই পর্যায়ে।

এই প্রথমবারের মতো, ভারতের জনগণনার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে জাতিগত জনগণনা। বহুদিন ধরেই বিরোধী দলগুলি এই দাবি জানিয়ে আসছিল, বিশেষত কংগ্রেস ও অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলির পক্ষ থেকে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।


জনগণনার আওতায় তিনটি প্রধান বিষয়:

1. ব্যক্তিসংখ্যা ও বসবাসের পরিসংখ্যান: বাড়িতে কতজন ব্যক্তি রয়েছেন, তাদের বসবাসের পরিমাণ ও প্রতি আবাসে কতজনের বসবাস— এই তিনটি মৌলিক দিক এবার বিশেষভাবে অন্তর্ভুক্ত।

2. ঘর-বাড়ির সংখ্যা:  জনগণনার অংশ হিসেবে দেশে মোট কতটি বাড়ি রয়েছে, তাও হিসেব করা হবে।

3. জাতিগত গণনা: বিভিন্ন জাতি ও জাতিগোষ্ঠীর শ্রেণিবিন্যাস ও সংখ্যা নির্ধারণ করার জন্য থাকবে পৃথক প্রশ্ন।

প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ জনগণনা হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে, যেখানে তথ্য সংগ্রহ হবে মোবাইল অ্যাপ বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। এটি যেমন সময় ও খরচ বাঁচাতে সাহায্য করবে, তেমনই রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।  দেশের একটি বড় অংশ এখনও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় পিছিয়ে। ইন্টারনেট সংযোগ ও স্মার্টফোনের প্রাপ্যতা এখনও সবার কাছে সমান নয়।প্রযুক্তি থাকলেও অনেক মানুষ ডিজিটাল ব্যবস্থায় অংশগ্রহণে অনভিজ্ঞ। ফলে, এই দিকগুলোতে বাড়তি উদ্যোগ না নিলে, জনগণনার নির্ভুলতা ও সামগ্রিক অংশগ্রহণ নিয়ে সংশয় দেখা দিতে পারে। কেন্দ্রীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, জাতিগত গণনা এবং অতিরিক্ত প্রশ্নাবলির ফলে এবারের জনগণনা সময়সাপেক্ষ হবে এবং ব্যয়ও তুলনামূলকভাবে বাড়বে। সরকারকে পরিকাঠামো উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় অতিরিক্ত বিনিয়োগ করতে হবে। 

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে: ইরানে ইজরায়েলের হামলা, পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা ঘনীভূত

উল্লেখযোগ্যভাবে, নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথমবার দেশে জনগণনা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। ২০১১ সালের পর ২০২১ সালে এই কাজ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। ফলে সরকারের অভ্যন্তরেও প্রশ্ন উঠছিল এই দীর্ঘ বিলম্ব নিয়ে। শেষ পর্যন্ত, ২০২4-25 সালে এসে জনগণনার সময়সূচি চূড়ান্ত করল কেন্দ্র। জনগণনা শুধুই সংখ্যা নয়— এটা দেশের ভবিষ্যৎ নীতি, পরিকল্পনা ও সম্পদের বণ্টনের ভিত্তি। ডিজিটাল প্রযুক্তির হাত ধরে একবিংশ শতকের এই জনগণনা যেমন এক নতুন দিগন্তের সূচনা করছে, তেমনই এর সাফল্য নির্ভর করছে দেশের প্রতিটি স্তরের মানুষের অংশগ্রহণের উপর। ডিজিটাল ব্যবস্থার সম্ভাবনা যেমন বিশাল, তেমনই এর অন্তর্নিহিত ঝুঁকিও অবহেলা করা যায় না। এই ভারসাম্য রক্ষা করে সরকার কতটা দক্ষতার সঙ্গে এই কর্মসূচি সম্পন্ন করতে পারে, এখন সেই দিকেই তাকিয়ে দেশবাসী।

Tags:

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

রাজনৈতিক দেশ
Related News