বর্তমান কর্মব্যস্ত জীবনে অফিস আর ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে পার্থক্য রাখা যেন এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে প্রযুক্তির কল্যাণে যখন কাজ এখন ঘরের ভিতরে চলে এসেছে, তখন ৯টা-৫টার চাকরি আর ঠিক ৯টা-৫টার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। ফলে, মানসিক চাপ, পারিবারিক অশান্তি, শারীরিক অসুস্থতা—সব কিছুর মূলেও রয়েছে কাজ ও জীবনের অসামঞ্জস্য। এই প্রেক্ষাপটে “ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালেন্স” এখন শুধুমাত্র একটি কর্পোরেট শব্দ নয়, বরং এটি একটি প্রয়োজনীয় জীবনদর্শন।
কেন গুরুত্বপূর্ণ ‘ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালেন্স’?
মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা: নিয়মিত কাজের চাপে ক্লান্তি, বিষণ্ণতা, উদ্বেগ বাড়ে। সম্পর্ক বজায় রাখা: কাজের বাইরে যদি পরিবার ও বন্ধুদের সময় না দেওয়া যায়, তাহলে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। শারীরিক সুস্থতা: শরীর বিশ্রাম না পেলে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কর্মক্ষমতা: নিরবিচারে কাজ করলে কর্মক্ষমতা কমে যায়, ভুল বাড়ে। ব্যক্তিগত উন্নয়ন: শখের চর্চা, আত্মউন্নয়ন, শিক্ষা বা ঘুরতে যাওয়ার মতো কাজগুলো জীবনের মান বাড়ায়।
চলুন জেনে নিই কিছু কার্যকরী কৌশল—কীভাবে রক্ষা করবেন এই ভারসাম্য:
সময়ের সীমারেখা টানুনঃ অফিসের সময়ের বাইরে অফিসের ফোন বা মেইল দেখা এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে 'ডু নট ডিস্টার্ব' মোড ব্যবহার করুন। হ্যাঁ বলার আগেও ভাবুনঃ প্রতিটি অতিরিক্ত কাজ বা দায়িত্ব গ্রহণ করার আগে নিজের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নিন। পারিবারিক সময় নির্ধারিত করুনঃ দিনে অন্তত একবেলা পরিবারের সঙ্গে খাবার খাওয়া, সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানো বা সঙ্গীর সঙ্গে আলাপ করুন। ছুটি মানে সত্যিকারের বিশ্রামঃ ছুটি নিয়ে কাজ করলে সেটা ছুটি নয়। তাই ছুটির দিনে মেইল এড়িয়ে চলুন, ফোন না ধরাই ভালো। ডিজিটাল ডিটক্স করুনঃপ্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে দূরে থাকুন। বই পড়া, সঙ্গীত শোনা বা হাঁটাহাঁটি করুন। নিজের শখের চর্চা করুনঃ ছবি আঁকা, গান গাওয়া, রান্না বা গাছের যত্ন—যে কোনো একটি শখকে সময় দিন ফিটনেস ও মেডিটেশন সময়সূচিতে রাখুন শরীরকে ভালো রাখতে রোজ হালকা এক্সারসাইজ, ইয়োগা বা মেডিটেশন করুন। এতে মানসিক চাপও কমে।
পর্যটনে নতুন দিগন্ত: ভারতের অর্থনীতির চাবিকাঠি হয়ে উঠছে পর্যটন শিল্প
উলেখ্য, একটি সুস্থ, সুষ্ঠু ও পূর্ণ জীবনযাপনের জন্য কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের মাঝে সুসমন্বয় অপরিহার্য। পেশা যেমন পরিচয়ের অংশ, তেমনই সম্পর্ক, স্বাস্থ্য, নিজেকে সময় দেওয়া—সব কিছু মিলেই পরিপূর্ণতা।তাই সময় থাকতে সচেতন হোন, নিজেকে গুরুত্ব দিন।মনে রাখবেন—“কাজের জীবন থাকতে পারে, কিন্তু জীবনের কাজটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”