ভারতের ভ্রমণ ও পর্যটন দেখা দিতে চলেছে অভাবনীয় আর্থিক উন্নয়ন। বিশ্ব ভ্রমণ ও পর্যটন পরিষদ (WTTC)-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫ সালে এই খাতটি দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে চলেছে প্রায় ২২ লাখ কোটি টাকা, যা ইতিহাসে অন্যতম সর্বোচ্চ। পাশাপাশি, এই খাতে কর্মসংস্থানের সংখ্যা ৪৮ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা। ভারতের পর্যটন শিল্প আজ দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে। দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের ক্রমবর্ধমান আগমন, উন্নত পরিকাঠামো এবং সরকারের নানান প্রচেষ্টার ফলে এই শিল্প দ্রুত অগ্রগতির পথে।
পর্যটন ক্ষেত্রের বিকাশের মূল দিকগুলি:
ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি: তাজমহল থেকে খাজুরাহো, বেনারস থেকে সিকিম – ভারতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি বিশ্বজুড়ে মানুষের আগ্রহ বেড়েই চলেছে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: হিমালয়, রাজস্থানের মরুভূমি, কেরালার ব্যাকওয়াটার – প্রকৃতির বৈচিত্র্যে ভরপুর ভারত পর্যটকদের স্বপ্নের গন্তব্য।
স্বাস্থ্য ও আয়ুর্বেদ: যোগ এবং আয়ুর্বেদের প্রতি আগ্রহ বাড়ায় ‘ওয়েলনেস ট্যুরিজম’-এর চাহিদাও অনেক বেড়েছে।
অবকাঠামো উন্নয়ন: হোটেল, বিমানবন্দর, পরিবহণ ব্যবস্থা, এবং ডিজিটাল গাইডলাইন এখন পর্যটকদের জন্য আরও সহজ ও নিরাপদ করেছে ভ্রমণ।n ভারতের পর্যটন শিল্প শুধু রাজস্ব বা চাকরি তৈরি করছে না, বরং বিশ্বের দরবারে ভারতের ভাবমূর্তি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যকে তুলে ধরছে। এই শিল্পের বিকাশ ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে।
উলেখ্য, এই আর্থিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে দেশে ও বিদেশে বেড়ে চলা পর্যটকের সংখ্যা। করোনার পরবর্তী সময়ে ভারতকে নতুন করে আবিষ্কার করতে আগ্রহী দেশি পর্যটকের পাশাপাশি, ভারতীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও আয়ুর্বেদিক স্বাস্থ্যচর্চা আকৃষ্ট করছে বহু বিদেশিকেও। সরকারের "ডেকো ইন্ডিয়া", "এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত", এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকারের প্রচারাভিযান ও অবকাঠামো উন্নয়নও এই উন্নয়নের পিছনে অন্যতম কারণ। বিমানবন্দর, হোটেল, ট্রান্সপোর্ট এবং গাইডলাইন ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ বিদেশি পর্যটকদের জন্য ভারতকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলছে। এই সেক্টরের দ্রুত বিস্তৃতির কারণে হোটেল ম্যানেজমেন্ট, ট্যুর গাইড, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, লোকাল হস্তশিল্প, হস্তশিল্প বিপণন প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিপুল কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বলা যায়, ভারতের পর্যটন শিল্প কেবলমাত্র দেশের আর্থিক উন্নয়নের সহায়ক নয়, বরং ভারতের সাংস্কৃতিক দূত হিসেবেও বিশ্বের দরবারে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছে।