মে মাসের শেষ সপ্তাহে ভারতে ফের একবার করোনার সংক্রমণে উদ্বেগজনক উত্থান দেখা যাচ্ছে। ১৯ মে’র পর থেকে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৬ মে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা যেখানে ছিল ১০১০, ৩০ মে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৭১০-এ। ৩১ মে এক ধাক্কায় আরও কয়েকশো মানুষ সংক্রমিত হন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ৩১ মে পর্যন্ত ভারতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩,৩৯৫। একদিনে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৬৮৫ জন। এই নতুন সংক্রমণ ঢেউয়ের মূল কেন্দ্র হয়ে উঠেছে কেরল। বর্তমানে সে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩৩৬। ৩০ মে-র পর একদিনে সেখানে সংক্রমণ বেড়েছে ১৮৯ জনের। মহারাষ্ট্রে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬৭-এ, যেখানে একদিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩।
দিল্লি: মোট আক্রান্ত ৩৭৫, একদিনে নতুন ৮১ সংক্রমণ।
গুজরাট:মোট আক্রান্ত ২৬৫, নতুন ৪২।
কর্ণাটক: মোট আক্রান্ত ২৩৪।
তামিলনাড়ু: মোট আক্রান্ত ১৮৫।
উত্তরপ্রদেশ: মোট আক্রান্ত ১১৭।
পশ্চিমবঙ্গ: মোট আক্রান্ত ২০৫, একদিনে নতুন সংক্রমণ ৮৯।
উলেখ্য, ৩১ মে দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। যদিও মৃত্যুর হার এখনও তুলনামূলকভাবে কম, তবে নতুন ভ্যারিয়েন্টের হদিশে বাড়ছে উদ্বেগ। শনিবার দেশে খোঁজ মিলেছে করোনার দুটি নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্টের— NB.1.8.1 এবং LF.7। এই ভ্যারিয়েন্টগুলির অন্তত চারটি উপপ্রকার শনাক্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই সাবভ্যারিয়েন্টগুলিকে এখনো Variant Under Monitoring (VUM) হিসেবে চিহ্নিত করেছে, অর্থাৎ এখনও এগুলিকে 'Variant of Concern' বা 'Variant of Interest' হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়নি। তবে চিনসহ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে এই ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে।
অনুব্রতর ফোন বিতর্কে নতুন মোড়, অডিও ক্লিপ ‘AI-নির্মিত’ বলে দাবি ঘনিষ্ঠের
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলির সংক্রমণ ক্ষমতা বেশি হলেও এখনও পর্যন্ত বড় ধরনের রোগ প্রবণতা বা মৃত্যুহার দেখা যায়নি। তবে সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে ফের একবার মাস্ক, সামাজিক দূরত্ব এবং টিকাকরণ প্রচারে জোর দিতে হতে পারে। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়েও কোভিড-১৯ তার রূপ বদলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সমস্যা তৈরি করে চলেছে। ভারতে সংক্রমণের নতুন ঢেউ এবং ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাব নিঃসন্দেহে সতর্কতার ঘন্টা বাজাচ্ছে। এই অবস্থায় কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলির পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও যথেষ্ট সচেতন এবং প্রস্তুত থাকতে হবে।