বীরভূমের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপ ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যেখানে বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা যাচ্ছে এক ব্যক্তিকে—যাঁর কণ্ঠ অনুব্রত মণ্ডলের বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে এবার সেই বিতর্কে নাটকীয় মোড় আনলেন অনুব্রতের ছায়াসঙ্গী দেবব্রত সরকার। তাঁর দাবি, "এই অডিও অনুব্রতের নয়, এটি AI (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)-এর সাহায্যে বানানো।"
প্রসঙ্গত, অডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর শুক্রবার পুলিশের তরফে অনুব্রতের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে চারটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে দুটি জামিন অযোগ্য ধারাও। তাঁকে তলব করা হয় রবিবার সকাল ১১টায় বোলপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের দপ্তরে। তবে নির্ধারিত সময়ে সেখানে অনুব্রত নয়, হাজির হন তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সহযোগী দেবব্রত সরকার। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেবব্রত জানান, “অনুব্রত মণ্ডল ওই ফোনটি করেননি। ওটা AI দিয়ে তৈরি করা অডিও। এটা ষড়যন্ত্র।” কারা এই ষড়যন্ত্রে জড়িত—জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, "বিজেপির হাত থাকতে পারে, এমনকি দলের ভিতর থেকেও কেউ জড়িত থাকতে পারে।" তবে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, যদি ফোন অনুব্রত মণ্ডলের না হয়ে থাকে, তাহলে তিনি কেন লিখিতভাবে ক্ষমা চাইলেন? দেবব্রতের ব্যাখ্যা, “দল তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলেছে, তাই তিনি চেয়েছেন। অনুব্রত একজন অনুগত সৈনিক। দল যা বলবে, তিনিও সেটাই করবেন।”
পরপর দুই মাসে কমল বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম, স্বস্তিতে ব্যবসায়ীরা
উলেখ্য, এই ঘটনার জেরে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে রাজনীতিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের বিষয়ে। যদি দাবিটি সত্যি হয়, তবে তা অত্যন্ত গুরুতর—কারণ এতে স্পষ্টভাবে প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে রাজনৈতিক চরিত্রহননের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে পুলিশ এই দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রযুক্তিগতভাবে অডিও বিশ্লেষণের পথে এগোবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, পুলিশ তদন্তের মাধ্যমে আদৌ প্রমাণ করতে পারে কি না যে অডিওটি AI দিয়ে তৈরি, না কি এটি সত্যিই অনুব্রতের কণ্ঠস্বর। যেভাবেই হোক, এই ঘটনা শুধু বীরভূম নয়, রাজ্য রাজনীতিতেই এক নতুন বিতর্কের জন্ম দিল।