ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার আবহে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে ফের বড় সিদ্ধান্ত। গুজরাট, পাঞ্জাব, রাজস্থান এবং জম্মু ও কাশ্মীর—এই চারটি সীমান্ত রাজ্যে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির প্রস্তুতি হিসেবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নতুন করে **মক ড্রিল** বা মহড়া আয়োজনের।
সাম্প্রতিক ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ ভারতের সফল অভিযানে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সীমান্ত লাগোয়া এলাকাগুলিতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা করে পাকিস্তান। তবে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেই আক্রমণ ব্যর্থ করে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দপ্তর থেকে সীমান্ত রাজ্যগুলিতে নতুন করে মক ড্রিল পরিচালনার নির্দেশ জারি হয়।
মক ড্রিল মূলত যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির জন্য সাধারণ মানুষ, ছাত্রছাত্রী এবং স্থানীয় প্রশাসনকে প্রস্তুত করতে আয়োজিত মহড়া। এই মহড়ায় নাগরিকদের শেখানো হয়:
আকস্মিক বিমান হানার সময় সাইরেন বাজলে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।
ব্ল্যাকআউট পরিস্থিতিতে কী কী নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
জরুরি খাদ্য ও পানীয় সংরক্ষণ।
স্থানীয় আশ্রয়স্থলের ব্যবহার।
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে করণীয়।
১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের পর এই প্রথম এত বিস্তৃত পরিসরে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে মহড়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত ৭ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দেশের ২৭টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ২৫৯টি স্থানে মক ড্রিলের নির্দেশ দিয়েছিল। মহড়ার মাধ্যমে একটি দ্বিমুখী বার্তা দেওয়া হচ্ছে—একদিকে পাকিস্তানকে সতর্ক বার্তা, অন্যদিকে দেশের নাগরিকদের যুদ্ধ বা জরুরি পরিস্থিতিতে প্রস্তুত থাকার অনুশীলন। এটি শুধুই সামরিক কৌশল নয়, একটি সামাজিক সচেতনতামূলক প্রয়াসও। চলমান পরিস্থিতি ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ বাড়ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলি একদিকে ভারতের কূটনৈতিক ও সামরিক প্রস্তুতির প্রতীক, অপরদিকে তা প্রশ্ন তুলছে তাহলে কি ভারত-পাক ফের সংঘাতের দিকে এগোচ্ছে? এ প্রশ্নের উত্তর সময়ই দেবে। তবে এখনই যা স্পষ্ট—সীমান্ত রাজ্যগুলিতে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে।