গাজ়া ভূখণ্ডে ফের ইজ়রায়েলের বোমাবর্ষণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮৫ জন। গাজ়ার স্বাস্থ্য প্রশাসনের এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম ‘আল জাজ়িরা’ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের জেরে বহু ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
উলেখ্য, গোটা পরিস্থিতিকে 'চরম মানবিক বিপর্যয়' বলে আখ্যা দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। সংস্থাটি সতর্ক করে জানিয়েছে, যদি দ্রুত ও পর্যাপ্ত ত্রাণ না পৌঁছায়, তাহলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অনাহারে মারা যেতে পারে প্রায় ১৪ হাজার শিশু। যদিও সাম্প্রতিক কিছু ত্রাণ ঢুকতে পেরেছে গাজ়ায়, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। গাজ়ার স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে খাদ্য ও পানীয়ের অভাবে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু এবং প্রবীণ। পরিস্থিতি ক্রমেই আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। গাজ়ায় বসবাসকারী প্রায় ২১ লক্ষ মানুষের অর্ধেকই শিশু। ইজ়রায়েলের দাবি, তারা ‘সীমিত পরিমাণে’ মানবিক সহায়তা পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে। দীর্ঘ ১১ সপ্তাহ পর সোমবার গাজ়ায় ঢুকেছে পাঁচটি ত্রাণবোঝাই ট্রাক। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবিক সহায়তা বিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার একে ‘প্রয়োজনের সাগরে এক ফোঁটা জল’ বলে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ এবং পূর্ব লেবাননেও হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা। নভেম্বর ২০২৩-এ সংঘর্ষবিরতির পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার হামলা চালানো হল লেবাননে, যেখানে অন্তত একজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আন্তর্জাতিক মহলেও বাড়ছে চাপ। ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং কানাডা কড়া বার্তা দিয়ে জানিয়েছে, যদি ইজ়রায়েল গাজ়ায় সামরিক অভিযান ও ত্রাণ প্রবেশে বাধা না থামায়, তাহলে তারা ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নিতে বাধ্য হবে। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও স্বীকার করেছেন, এই মুহূর্তে দেশটির পাশে তাদের ‘বন্ধুরাষ্ট্র’গুলো নেই।
মহম্মদ ইউনুসের পদত্যাগের ভাবনা: সংকট না কৌশল?
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজ়ায় পূর্ণমাত্রায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইজ়রায়েল। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে কাতার, আমেরিকা ও মিশরের মধ্যস্থতায় সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও মার্চ থেকে আবারও তীব্রতা বাড়ায় সংঘর্ষের। বর্তমানে গাজ়া জুড়ে মানবিক সংকট সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।