#Pravati Sangbad Digital Desk:
বঙ্গ বিজেপি দলের সময় যে খুব ভালো যাচ্ছে না তা বলাই বাহুল্য। পদ্ম শিবিরের একে একে প্রায় বেশ কিছু নেতা ইতিমধ্যেই দল বদল করেছেন ঘাসফুল শিবিরে। একুশের নির্বাচনের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে দলবদল চলছে। বাংলার ক্ষেত্রে তা একেবারেই একমুখী। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে আসছেন দলত্যাগীরা। ব্যারাকপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন। তিনি ২০১৯-এর আগে তৃণমূলের সদস্য ছিলেন। দলীয় কোন্দলে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।এমতাবস্থায় এবার বীরভূম বিজেপির সংগঠনে নামল ব্যাপক ধস। একসঙ্গে দলত্যাগ করলেন ৩০ জন বিজেপি প্রার্থী।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বীরভূমের দুবরাজপুরে বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য-সহ মোট ৩০ জন পদাধিকারী তাদের পদ ছেড়েছেন। পাশাপাশি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য জেলা কমিটির কাছে লিখিতও আবেদনও জানিয়েছেন তাঁরা।পদত্যাগীদের তালিকায় শহর সভাপতি সন্দীপ আগরওয়াল, শহর সাধারণ সম্পাদক স্বরূপ আচার্য রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। যা নিয়েই বর্তমানে জোরদার চর্চা শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনীতির ময়দানে।
এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিজেপি-র জেলা কমিটির সদস্য প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা এবং দুবরাজপুর বিধানসভার বিধায়ক অনুপ সাহা দলকে তৃণমূলের হাতে বিক্রি করে দিয়েছেন।বিজেপির কোনও নীতি এবং উন্নয়নের পরিকল্পনা নেই। তাই আমরা একযোগে সকলে পদত্যাগ করলাম। আমরা পদ ও দল দুটোই ছেড়েছি।” অন্যদিকে দলত্যাগী বিজেপি-র দুবরাজপুর সহ-সভাপতি সন্দীপ আগরওয়াল বলেন, “তিন দিন আগে বিধায়ক এবং বর্তমান জেলা সভাপতি বৈঠক করেন। সেখানে একটি নির্বাচনী কমিটি তৈরি হয়। অথচ আমাদের তা নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি। যা নিয়ে দলের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছিল।"
একের পর এক বিজেপি নেতাদের পদত্যাগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে, সেই প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিতে তিনি জানান, "বিজেপিতে কেউ সভ্য লোক থাকতে পারে না। সকলকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে স্বাগত জানাই।”প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শেষ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই রাজ্য বিজেপির সংগঠনে ব্যাপক ধস নামতে শুরু করে। একাধিক বিধায়ক–সাংসদ থেকে নেতা–কর্মী–সমর্থকরা বিজেপি ছাড়তে শুরু করেন। এদিকে দলত্যাগীদের সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বিজেপি-র দুবরাজপুরের বিধায়ক অনুপ সাহা খানিক রাগাণ্বিত স্বরেই বলেন, ‘‘দলীয় নীতি মেনে যারা কাজ করেন, তাঁদের সর্বদা সম্মান দেওয়া হয়। যাঁরা তা মেনে চলবে না, তাঁরা নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।”
এইদিকে এবার পুরভোটের আগে ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন বিজেপি সভাপতির এই দলত্যাগ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ব্যারাকপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি পার্থ ভৌমিকের হাত ধরে তৃণমূলে ফেরেন রবীন্দ্রনাথ। তৃণমূলে ফিরে এসে রবীন্দ্রনাথ বলেন, তৃণমূলের এক নেতার সঙ্গে আমার মনোমালিন্য হয়েছিল বলেই দল ছেড়েছিলাম। বিজেপিতে গিয়ে সংগঠন গড়ার চেষ্টা করলেও পারিনি। যদিও আমি বিডেপিতে সভাপতি ছিলাম। কিন্ত সেখান থেকেও আমার মনে হয়েছে ভাইয়ে ভাইয়ে কথা কাটাকাটি হবেই, তাই নিজের ঘরে গিয়েই সেটা করা ভালো। তাই আমি ফের সবাইকে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলাম।
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, একুশের নির্বাচনে বাংলায় বিপুল জয়ের পর মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, আগামী ২৫-৩০ বছর বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও বিকল্প হবে না। বিজেপির কোনও ভবিষ্যৎ নেই। তাই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের ফেরার হিড়িক পড়েছে।