বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি ৩৩৯৯ জন ভারতীয়কে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই অভিবাসীদের মধ্যে ভারত ছাড়াও চিন, পাকিস্তান, নেপাল এবং ফিলিপিন্সের নাগরিকরা রয়েছেন। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসীরা চলতি মাসের মধ্যে দেশ না ছাড়লে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যা তাদের পুশব্যাক (প্রত্যাবাসন) করার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে।
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এই অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে ১,০৯৯ জন চিনের নাগরিক, ৩৭৬ জন নেপালের নাগরিক, ১৪০ জন পাকিস্তানের নাগরিক এবং ১৩১ জন ফিলিপিন্সের নাগরিক। তাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের ফলস্বরূপ, শর্তপুরণ না করলে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। বাংলাদেশ সরকারের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত বছরের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ হাই কোর্ট সরকারের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিল বেআইনি অভিবাসীদের চিহ্নিত করে ফিরিয়ে পাঠানোর। সরকারের এই পদক্ষেপটি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং অভিবাসন নীতির কার্যকর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে।
ভুয়ো ভোটার কাণ্ডে আজও উত্তাল সংসদ চত্বর
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সরকারের তথ্যমতে, তিন মাস আগে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল, যেখানে বলা হয়েছিল যে সকল বেআইনি অভিবাসীকে ৩১ মার্চের মধ্যে দেশ ত্যাগ করতে হবে। তখন এই ধরনের অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা ছিল ৪৯,২৬৫ জন। পরবর্তীতে, ১৮ নভেম্বর থেকে ৬ মার্চের মধ্যে মোট ৪৩,১৬৮ জন অবৈধ অভিবাসী তাদের নিজস্ব দেশে ফিরে গেছেন। তাদের কাছ থেকে সরকার মোট ৪০ কোটি ২৭ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে। বাংলাদেশের এ উদ্যোগে সরকারের একাধিক উদ্দেশ্য রয়েছে। এর মাধ্যমে সরকার দেশে থাকা অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে আরও কঠোর মনোভাব পোষণ করছে এবং অবৈধ অভিবাসনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে আন্তর্জাতিকভাবে নিজেকে দায়বদ্ধ করছে। একই সঙ্গে, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রতি সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন। এছাড়া, অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিও সম্ভব হবে। সরকারের উদ্দেশ্য হলো, যাতে ভবিষ্যতে অবৈধ অভিবাসনের প্রবণতা কমে আসে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও স্থানীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধা বজায় থাকে। বাংলাদেশ সরকার অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, এসব পদক্ষেপের বাস্তবায়ন যেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি না করে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা না থাকে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।