বেসরকারি স্কুলগুলিতে ফি বৃদ্ধির জন্য মধ্যবিত্ত অভিভাবকদের যে চাপ বাড়ছে, তার বিরুদ্ধে এখন সরকারই ভাবনাচিন্তা করছে। এই চাপ থেকে মুক্তি পেতে, রাজ্য সরকার শিগগিরই একটি বিধানসভা বিল আনার পরিকল্পনা করছে। এর মাধ্যমে বেসরকারি স্কুলগুলির ফি বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনা হতে পারে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু মঙ্গলবার বিধানসভায় এই তথ্য জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বিধানসভার দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয় ১০ মার্চ থেকে এবং এটি চলবে ২০ তারিখ পর্যন্ত। গত মঙ্গলবার, বিজেপির এক বিধায়ক বেসরকারি স্কুলগুলির লাগামহীন ফি বৃদ্ধির প্রসঙ্গে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চেয়েছিলেন। তার উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী জানান, সরকার ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেছে এবং খুব শিগগিরই বেসরকারি স্কুলগুলির ফি বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে একটি কমিশন গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। ব্রাত্য বসু আরও জানান, ফি বৃদ্ধির ফলে অভিভাবকদের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে এবং এই বিষয়ে বেশ কিছু অভিযোগও সরকারে কাছে পৌঁছেছে। তাই, সরকার এই সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে। এবারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য কমিশনের আদলে একটি নতুন কমিশন গঠন করতে যাচ্ছে, যার কাজ হবে বেসরকারি স্কুলগুলির ফি বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা। এই কমিশন উচ্চহারে ফি বৃদ্ধির কারণে উদ্ভূত সমস্যাগুলোর সমাধান করবে। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও ব্রাত্য বসুর বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানান এবং এ ধরনের একটি কমিশন গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
ভারতে সাইবার প্রতারণার ফাঁদে ফেলে মায়ানমারে বন্দী ২৮৩ ভারতীয়
উলেখ্য, এটি নতুন কোন উদ্যোগ নয়। এর আগে, ২০২৩ সালে রাজ্য মন্ত্রিসভা 'ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইভেট স্কুল রেগুলেটরি কমিশন' গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিল। সেই সময় ১১ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিশনের জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এর মধ্যে স্কুল শিক্ষা কমিশনার, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, উচ্চশিক্ষা সংসদের সভাপতি, শিক্ষামন্ত্রী মনোনীত দু'জন শিক্ষাবিদ, সিবিএসই এবং আইসিএসই বোর্ডের প্রতিনিধিরা থাকার কথা ছিল। তবে, গত দুই বছরে সেই কাজ এগিয়ে যায়নি। এখন, ফের নতুন করে বেসরকারি স্কুলগুলির ফি নিয়ন্ত্রণে কমিশন গঠনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে রাজ্য সরকার মধ্যবিত্ত পরিবারের উপর চাপ কমাতে এবং শিক্ষার মান যাতে বিঘ্নিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে চাইছে। এবারের পদক্ষেপগুলি অভিভাবকদের জন্য আশার আলো হতে পারে, যারা তাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত থাকেন এবং যে কোনো খরচ মেটানোর জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করেন।