দমদমের চৈতালি হালদার নামে এক প্রৌঢ়া সম্প্রতি গুরুতর প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অভিযোগ, ডিজিটাল অ্যারেস্টের ভয় দেখিয়ে দু'মাস ধরে ঘরবন্দি করে রাখা হয় তাকে এবং তার স্বামীকে। এই সময়ের মধ্যে তারা অনলাইনে পাঁচটি কিস্তিতে মোট ৫২ লক্ষ টাকা প্রতারকদের হাতে তুলে দেন।
প্রসঙ্গত, মাস দুয়েক আগে একটি ভিডিয়ো কল আসে চৈতালির কাছে, যেখানে অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে সিবিআই অফিসার বলে পরিচয় দেন। তিনি জানান, চৈতালি হালদারের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে এবং সেই সম্পর্কিত কিছু নথি পাওয়া গেছে। আরও জানান হয় যে, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি শুরু হতে চলেছে এবং যতদিন না শুনানি শেষ হচ্ছে, ততদিন চৈতালির ঘরেই থাকতে হবে। এছাড়া, তাকে সতর্ক করা হয় যে, এই বিষয়টি সম্পর্কে সে যেন কাউকে কিছু না জানায়, এমনকি আত্মীয় বা ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদেরও এই কথা জানানো যাবে না। চৈতালি জানিয়েছেন, তাকে বলা হয়েছিল যে, গত দু'মাসে তিনবার শুনানি হয়েছে এবং গত মঙ্গলবার শুনানি শেষে শীর্ষ আদালত ৫২ লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য করেছে।
বালিকাবধূ চারজন কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন!
উলেখ্য, এই ভয়ে চৈতালি তার সমস্ত সঞ্চয় ভেঙে ছ'দফায় মোট ৫২ লক্ষ টাকা অনলাইনে প্রতারকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন। চৈতালির অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতারকরা তাকে ভয় দেখিয়ে এবং নথির কথা বলে তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। এ ঘটনার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই ধরনের ডিজিটাল প্রতারণা অত্যন্ত জটিল এবং সাবধান থাকতে হবে। চৈতালি হালদারের মতো নিরীহ মানুষরা প্রতারণার শিকার হচ্ছে এবং পুলিশের উদ্দেশ্য এই ধরনের অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা। এই ঘটনা একদিকে যেমন মানুষের ওপর প্রতারণার ভয়াবহ প্রভাব স্পষ্ট করে, তেমনি ডিজিটাল জগতে সতর্কতার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরছে। বিশেষ করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে এ ধরনের প্রতারণা এক অশনি সংকেত হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপরাধীরা যে কোনও উপায়েই সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে, তাই সকলকে সাবধান থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জনগণকে সচেতন থাকতে এবং এমন ঘটনায় প্রশাসনের কাছে তৎক্ষণাত অভিযোগ করার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।