Flash News
    No Flash News Today..!!
Monday, November 10, 2025

অভাবের সংসারে আইএএস হওয়ার স্বপ্ন দেখে সপ্তদশী "বীরাঙ্গনা"

banner

journalist Name : Bidisha Karmakar

#Pravati Sangbad Digital Desk :

নিজের পরিচিতি ধীরে ধীরে স্পষ্ট করে তুলছে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী মুনমুন দে। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তার লেখা বই ‘ডিভাইন ডিপারচার’ ইতিমধ্যেই গোটা দেশে সাড়া ফেলেছে। যদিও তার পরিবার আর্থিক দিক থেকে সংকটে রয়েছে, মুনমুনের বাবা-মা তাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখছেন। আলিপুরদুয়ারের ভাটিবাড়ি গ্রামে বসবাসকারী এই মেধাবী কিশোরী দেশের সর্বোচ্চ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার আইএএস হওয়ার স্বপ্ন দেখে।


মুনমুনের বাবা উত্তম দে সাইকেল মেরামতির একটি ছোট দোকান চালান, যেখানে দিনশেষে বড়জোর দু'আড়াইশো টাকার বেশি আয় হয় না। তবে, পরিবারের অল্প আয়-রোজগার সত্ত্বেও তার বাবা-মা কখনোই মুনমুনের স্বপ্নে বাধা দেননি। এর মধ্যে, মুনমুনের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়, যখন সে নিজের প্রথম বই ‘ডিভাইন ডিপারচার’ প্রকাশিত করে। দিল্লির একটি নামী প্রকাশনা সংস্থা এটি ছেপেছে, এবং বর্তমানে ই-কমার্স অ্যাপগুলিতে বইটির বেশ কয়েকটি কপি বিক্রি হয়েছে। মুনমুনের লেখায় রয়েছে গভীর জীবনবোধ। তার মতে, "বার্ধক্য আবশ্যক। তা যখন আসবে, তখন তাকে জায়গা ছেড়ে দিতেই হবে। নতুনরা আবার তা পুরণ করবে।" তার এই চিন্তা-ভাবনা তার লেখায় স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে, যা পাঠকদের মনে এক গভীর প্রভাব রেখে যায়। মুনমুন জানায়, ২০২২ সালে তার ঠাম্মা ও দাদুর মৃত্যু তাকে এক নতুন অভিজ্ঞতার মধ্যে ফেলেছিল। তাদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে নতুনের আবির্ভাব দেখতে পেয়ে, মুনমুনের লেখার হাতেখড়ি হয়। এছাড়া, মুনমুনের জীবনের অঙ্গীকারে রয়েছে নতুন কিছু জানার আগ্রহ এবং আত্মবিশ্বাস। 'বুক রিডিং উইথ ড. কিরণ বেদি' শো দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হন এবং কিরণ বেদির সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশগ্রহণ করেন। কিরণ বেদি তার কাজের প্রশংসা করেছেন, যা মুনমুনের জন্য অনেক বড় সন্মান। ২০২২ সালে তিনি 'বীরাঙ্গনা' পুরস্কারও পান। আরও, রেল সহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা তাকে তার কাজের জন্য সম্মানিত করেছে, যা তার জীবনের অন্যতম সঞ্চয় বলে মনে করে।

মহাশিবরাত্রিতে উপবাস সম্পর্কিত সমস্ত নিয়ম এবং গুরুত্ব জেনে নিন

প্রসঙ্গত,  মুনমুনের স্বপ্ন সীমাবদ্ধ নয় শুধুমাত্র লেখালেখির মধ্যে। তিনি কামাখ্যাগুড়ি হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউপিএসসি প্রস্তুতির জন্য ভর্তি হতে চান। মাধ্যমিকের পর থেকেই সে এই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। তার মতে, “এই সমাজকে আমার সবটা দিতে চাই। নতুন প্রজন্মই তো দেশের ভবিষ্যৎ, তাই প্রথমে দরকার ব্যক্তিত্ব গঠন, তারপর মেধা, ধৈর্য ও একাগ্রতা। এগুলোই আমার জীবনবোধের সিঁড়ি।”মুনমুনের বাবা উত্তম দে বলেন, "মেয়ের স্বপ্নপূরণের জন্য যা করতে হয়, তাই করব।" তিনি মুনমুনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও প্রয়াসকে খুব গুরুত্ব দেন। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশীও মুনমুনকে তার কাজের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে তার এই প্রচেষ্টা আরও অনেককে অনুপ্রাণিত করবে। এখন মুনমুন তার দ্বিতীয় বই ‘এম্পটিনেস’ নিয়ে ব্যস্ত, যা খুব শীঘ্রই প্রকাশিত হবে। সাহিত্য, শিক্ষা, এবং জীবনের প্রতি তার গভীর উপলব্ধি এবং দৃঢ় মনোবল তাকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

Tags:

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

শিক্ষা
Related News