ইজরায়েলে দুই ব্রিটিশ সাংসদ ইউন ইয়ং ও আবতিসাম মহম্মদকে আটক নিয়ে নতুন কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিটেন ও ইজরায়েলের মধ্যে এই ঘটনা নিয়ে তীব্র আলোচনা চলছে। ইজরায়েলে প্রবেশের পর দুজন সাংসদকে আটক করা হয় এবং তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
স্কাই নিউজের রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্রিটিশ সাংসদ ইউন ইয়ং এবং আবতিসাম মহম্মদকে গোপনে ইজরায়েলের ‘নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যকলাপ’ নথিভুক্ত করার এবং ‘ইসরায়েল-বিরোধী ঘৃণা ছড়ানোর’ অভিযোগে আটক করা হয়েছে। এই অভিযোগে তাঁদের ইজরায়েলে প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। জানা গেছে, তাঁরা একটি ব্রিটিশ সংসদীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে ইজরায়েল সফরে গিয়েছিলেন। ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "ইসরায়েলি সরকারের বিদেশমন্ত্রকের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি যে ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের সঙ্গে এই ধরনের আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।" তিনি আরও বলেন, "আমরা আজ রাতে উভয় সংসদ সদস্যের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং তাদের সমর্থন প্রদানের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।" এছাড়া, ডেভিড ল্যামি যুক্তরাজ্যের সরকারের অবস্থানও পরিষ্কার করেছেন। তিনি বলেন, "যুক্তরাজ্য সরকারের লক্ষ্য হল যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করা, রক্তপাত বন্ধ করা, পণবন্দিদের মুক্তি দেওয়া এবং গাজায় সংঘাতের অবসান ঘটানোর জন্য আলোচনায় ফিরে আসা নিশ্চিত করা।"
উলেখ্য, এই ঘটনাটির মধ্যে গাজা অঞ্চলে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটও রয়েছে। গত কয়েকদিনে ইজরায়েল গাজায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ চালিয়েছে, যার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। হোয়াইট হাউসের সমর্থনে যুদ্ধবিরতি শর্তাবলী মেনে নিতে হামাসকে চাপ দেওয়া হলেও, ইজরায়েল আকস্মিক বোমাবর্ষণের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি বাতিল করে দেয়। এর ফলে গাজায় ক্রমাগত রক্তপাত এবং অনেক প্যালেস্টাইনের মৃত্যু হয়েছে। তবে, সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, গাজায় মানবিক ত্রাণ পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে ইজরায়েল। খাবার, জ্বালানি এবং অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী গাজায় প্রবাহিত হচ্ছিল না, যা স্থানীয় জনগণের জন্য মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
আলমপুরের থার্মোকল কারখানায় বিধ্বংসী আগুন, এক কর্মীর মৃত্যু
প্রসঙ্গত, গাজায় ইজরায়েলের এই তীব্র বোমাবর্ষণের পর থেকেই সেখানে মানবিক সঙ্কট আরও ঘনীভূত হয়েছে। খবরে বলা হচ্ছে, গত বছরের অক্টোবর মাসে ইজরায়েলের পণবন্দিদের মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত ইজরায়েল এই সংঘাতের পথে অনড় থাকবে। ইউকে ও ইজরায়েলের মধ্যে এই কূটনৈতিক উত্তেজনা শুধুমাত্র রাজনৈতিক সম্পর্কের উপরই প্রভাব ফেলবে না, বরং গাজার পরিস্থিতিও আরও কঠিন হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আরও সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে এই পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত না হয় এবং বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানি ঠেকানো যায়। এতটুকু পর্যন্ত, ব্রিটেন ইজরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইজরায়েলের আচরণের বিষয়ে তীব্র সমালোচনা করা হচ্ছে।