বিশ্ব চলচ্চিত্রে অমর এক প্রতিভার নাম, হলিউডের খ্যাতনামী অভিনেতা ভাল কিলমার। কণ্ঠনালিতে দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসার বাসা বেঁধেছিল, এবং তার সাথে যুক্ত হয়েছিল নিউমোনিয়াও। কঠিন চিকিৎসা ও লড়াইয়ের পর, ৬৫ বছর বয়সে মৃত্যু কে জয় করে অবশেষে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন তিনি।
উলেখ্য, কিলমারের কন্যা মার্সিডিজ় কিলমার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তার বাবা শেষের দিকে নিউমোনিয়ার কারণে আর যুদ্ধ করতে পারছিলেন না। তিনি আর এই কঠিন লড়াইয়ের সাথে এগিয়ে যেতে পারছিলেন না, তবে, তার সাহস এবং লড়াইয়ের মনোভাব বিশ্ববাসীকে অনুপ্রাণিত করবে। ভাল কিলমার ছিলেন হলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় এবং প্রতিভাশালী অভিনেতা। তার বিখ্যাত ছবিগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল ব্যাটম্যান ফরএভার এবং দ্য ডোরস , যা হলিউডে এক বিশাল ছাপ ফেলেছিল। ১৯৫৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর লস এঞ্জেলসে জন্মগ্রহণ করা কিলমার মাত্র ১৫ বছর বয়সে তার ভাই ওয়েসলেকে হারিয়েছিলেন, যা তার জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। পরবর্তীতে, একাধিক সাক্ষাৎকারে কিলমার জানিয়েছিলেন, যদি তার ভাই বেঁচে থাকতেন, তবে তিনি একজন প্রথম সারির পরিচালক হতে পারতেন। ১৯৬৮ সালে আইসম্যান ছবির মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। এই ছবিতে তিনি একটি নৌ বিমানচালকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, যা তাকে পরিচিতি এনে দেয়। ১৯৮৬ সালে টম ক্রুসের সঙ্গে অভিনয় করেন টপ গান ছবিতে, যা তার ক্যারিয়ারের আরেকটি মাইলফলক হয়ে ওঠে। এরপর একে একে তিনি হিট, দ্য আইল্যান্ড অফ ডক্টর মোরেউ, দ্য সেন্ট ইত্যাদি হিট সিনেমায় অভিনয় করে অগণিত দর্শকের মন জয় করেন।
ফের ধেয়ে আসছে মহাভূমিকম্পন, রিপোর্ট প্রকাশ করল জাপান
প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালে কিলমার ব্রিটিশ অভিনেত্রী জোয়ানে হোলির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, তবে ১৯৯৬ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। ব্যক্তিগত জীবনে, কিলমারের জীবন ছিল একাধিক ওঠানামায় পূর্ণ, কিন্তু তার ক্যারিয়ার ছিল উজ্জ্বল। ২০১৫ সালে কণ্ঠনালিতে ক্যানসার ধরা পড়ার পর থেকে, তিনি এক কঠিন যুদ্ধ শুরু করেন। চিকিৎসার সাথে সাথে নিজের অভিনয় এবং ব্যক্তিগত জীবনেও বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। তবে, কিলমার তার মনোবল বজায় রেখে যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন, এবং ২০২১ সালে, তার জীবন নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র *ভাল* কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। সেই সময়, ব্রিদিং টিউব (শ্বাস নেওয়ার যন্ত্র) ব্যবহার করে প্রিমিয়ারে অংশ নেন তিনি, যা তার সাহসিকতার এক চমকপ্রদ উদাহরণ। কিলমারের মৃত্যু হল এক অসাধারণ প্রতিভার অবসান। তার অভিনয়, তার চরিত্রায়ন, তার শক্তিশালী উপস্থিতি দর্শকদের মনে দীর্ঘকাল থাকবে। এই মহান অভিনেতার অবদান চলচ্চিত্র জগতে চিরকাল স্মরণীয় থাকবে। কিলমারের জীবন ছিল সংগ্রাম এবং ত্যাগের এক জ্বলন্ত উদাহরণ, যা তার ভক্তদের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তবে, তিনি তাঁর অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের হৃদয়ে যে স্থান করে নিয়েছেন, তা কখনও মুছে যাবে না। ভাল কিলমারের আত্মা চিরকাল বেঁচে থাকবে তার চলচ্চিত্রের মাধ্যমে, এবং তার অবদান ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে।