সম্প্রতি আবারো বিতর্কের মুখে পড়েছেন কৌতুকশিল্পী কুণাল কামরা। যদিও আগেও নানা বিতর্কের শিকার হয়েছিলেন তিনি, তবে এবার পরিস্থিতি বেশ জটিল। একদিকে হুমকি, অন্যদিকে পুলিশের এফআইআর এবং একের পর এক সমন পাঠানো—কুণালের ওপর চাপ ক্রমাগত বাড়ছে। তাছাড়া, গত কয়েকদিন ধরে তাঁকে ঘিরে চলা রাজনৈতিক উত্তেজনা, বিশেষ করে মহারাষ্ট্রের রাজনীতির সঙ্গেও তাঁর কৌতুকের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, কুণাল কামরার বিরুদ্ধে শিবসেনা বিধায়কদের অভিযোগের ভিত্তিতে মুম্বই পুলিশের কাছে মানহানিকর মন্তব্যের জন্য মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে সমনও পাঠানো হয়েছে, যা নিয়ে কুণাল বেশ কিছুদিন ধরে সমস্যায় পড়েছেন। এমনকি তাঁকে হাজিরা দেওয়ার জন্য পুলিশ সমন পাঠালেও, কুণালের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত সময় চাওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। তবে ২৭ মার্চ, বৃহস্পতিবার জানা যায়, মুম্বই পুলিশ কুণালের আবেদনে সাড়া দেয়নি। ৩ এপ্রিল পর্যন্ত সময় চেয়েও, ৩১ মার্চের মধ্যে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কুণাল কামরা নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের মতে, কুণাল বেশ কিছুদিন ধরে ৫০০টিরও বেশি হুমকি ফোন পেয়েছেন। এমনকি তাঁকে হত্যারও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতি দেখে, কুণাল থানায় হাজিরা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তবে পুলিশ তার আবেদন নাকচ করে দিলে, কুণাল তার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কুণাল কামরা এখন মাদ্রাজ হাইকোর্টের মাধ্যমে আগাম জামিন চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেছেন। ২৮ মার্চ, শুক্রবার, তামিলনাড়ুর ভিল্লুপুরম শহরের বাসিন্দা কুণাল এই আবেদন মাদ্রাজ হাইকোর্টে জমা দেন। আদালত, বিচারপতি সুন্দর মোহনের সামনে এই আবেদনটি একটি জরুরি মামলা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। জানা গেছে, শিগগিরই আদালতে এই বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারে।
শুল্কযুদ্ধের মাঝে হুঙ্কার দিলেন নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনি
উলেখ্য, কুণালের বিতর্কের সূত্রপাত একটি কৌতুকের মাধ্যমে, যা তিনি মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে নিয়ে করেছিলেন। তার এই কৌতুক গানের ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে দেশে। এই ভিডিও নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং দুই গোষ্ঠী—বিজেপি ও শিবসেনা—একেকটি পক্ষ নিয়ে শোরগোল শুরু করে। এক পক্ষের মতে, কুণাল যা বলেছেন তা ঠিকই বলেছেন, অন্য পক্ষের দাবি, কুণালের মন্তব্যের মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে, যার ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক হতে শুরু করে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে কুণাল কামরা এখন আদালতের সাহায্য নিয়েছেন, কারণ তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত। তার বিরুদ্ধে জমা হওয়া এফআইআর এবং হুমকির কারণে তিনি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, যাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় এবং আগাম জামিনও পাওয়া যায়। এখন দেখা যাক, কুণালের আবেদন কীভাবে শুনানি হয় এবং এফআইআর, পুলিশি সমন, ও রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।