বৃহস্পতিবার মিশরের হুরঘাদা উপকূলে লোহিত সাগরে একটি পর্যটকবাহী ডুবোজাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনায় কমপক্ষে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও নয় জন গুরুতর আহত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। স্থানীয় প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা যায়, সাবমেরিনটি পর্যটকদের নিয়ে হুরঘাদার কাছের প্রবাল প্রাচীর দেখতে যাচ্ছিল। এই দুর্ঘটনায় ৪০ জনের মতো যাত্রী ছিল, যাদের মধ্যে ২৯ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, হুরঘাদা শহরের কাছে একটি সুপরিচিত হোটেলের মেরিনার সামনের সাগরে ডুবোজাহাজটি আচমকা ডুবে যায়। এটি ছিল ‘সিনবাদ’ নামের একটি সাবমেরিন, যা দীর্ঘদিন ধরেই হুরঘাদার পর্যটকদের প্রবাল প্রাচীর দেখতে নিয়ে যাচ্ছিল। হুরঘাদা শহর মিশরের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, যা তার অসাধারণ সমুদ্র সৈকত এবং বিশ্বের বিখ্যাত প্রবাল প্রাচীরের জন্য পরিচিত। তবে, এই দুর্ঘটনা নতুন নয়। ২০২৪ সালের নভেম্বরে একই এলাকায় 'সি স্টোরি' নামে একটি পর্যটকবাহী নৌকা ডুবে গিয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ উদ্ধারকাজে তৎপর থাকলেও, সাবমেরিনের দুর্ঘটনায় যারা আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে নয় জনের অবস্থা খুবই সংকটজনক। দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং জীবিত অবস্থায় ২৯ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
প্রসঙ্গত, ডুবোজাহাজটির দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয় প্রশাসন এবং মিশরীয় কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত একাধিক পক্ষও এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী হওয়ার আশঙ্কা করছে, তবে প্রাথমিকভাবে দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে যান্ত্রিক ত্রুটি বা অতিরিক্ত যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ছাড়ানোর বিষয়টি মাথায় রাখা হচ্ছে। এই দুর্ঘটনার পর, মিশরের পর্যটন খাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপারে আরও সতর্কতা জারি করা হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা হয়েছে।
উলেখ্য, এই ঘটনা মিশরের পর্যটন শিল্পের ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পর্যটকরা সাধারণত এই ধরনের আন্ডারওয়াটার দর্শনীয় স্থানগুলোতে তাদের সময় কাটাতে আগ্রহী থাকলেও, এমন দুর্ঘটনার ফলে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেতে পারে। হুরঘাদার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক পর্যটন সংস্থাগুলির পক্ষে এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। মিশরে পর্যটকবাহী নৌকা বা ডুবোজাহাজের দুর্ঘটনা নতুন নয়, তবে এটি পরিষ্কারভাবে প্রমাণ করে যে, পর্যটনখাতে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আরও অনেক উন্নতি প্রয়োজন।