বুধবার দিল্লি হাইকোর্টের এক বিচারপতির বাসভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা এখন সারা আদালত মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের পর ওই বিচারপতির বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, যা সবার নজর কাড়েছে। এই ঘটনাটি দ্রুত সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের কাছে পৌঁছায়, যার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজিয়াম অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের সময় দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মা শহরে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর পরিবারের সদস্যরা দমকল বিভাগ ও পুলিশকে ঘটনা জানিয়েছিলেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একটি ঘরে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা দেখতে পান, যা পরে বাজেয়াপ্ত করা হয়। স্থানীয় পুলিশ বিষয়টি তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানায় এবং পরে এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার কাছে পৌঁছায়। এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখেন এবং তার পরই একটি জরুরি কলেজিয়াম সভা ডাকা হয়। কলেজিয়াম সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয় যে বিচারপতি বর্মাকে অবিলম্বে বদলি করা উচিত। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে বদলি করা হয়েছে। তবে, কলেজিয়ামের কিছু সদস্য এই গুরুতর ঘটনাকে শুধু বদলির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার পক্ষে ছিলেন না। তারা মন্তব্য করেছেন যে, শুধুমাত্র বদলি হলে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে এবং প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা কমে যাবে। সেই কারণে, বিচারপতি বর্মাকে পদত্যাগ করতে বলার প্রস্তাবও উঠেছিল। তারা জানিয়েছেন, যদি বিচারপতি বর্মা পদত্যাগে অস্বীকার করেন, তবে প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করা উচিত।
নিবেদিতা সেতুর কাছে ভয়ংকর দুর্ঘটনা, ৪ জনের মৃত্যু, ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক
উলেখ্য, ১৯৯৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া অভ্যন্তরীণ তদন্ত পদ্ধতি অনুযায়ী, কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অসদাচরণ বা শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ উঠলে, প্রধান বিচারপতি প্রথমে বিচারপতির জবাব তলব করবেন। যদি প্রধান বিচারপতি সন্তোষজনক উত্তর না পান, তবে তিনি একটি তদন্ত প্যানেল গঠন করতে পারেন, যেখানে সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতি এবং হাইকোর্টের দুই প্রধান বিচারপতি থাকবেন। এ ঘটনায় আইনজীবী মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে এবং এই ঘটনাটি আরও গভীর তদন্তের দাবি তুলছে। আদালতের সুনাম ও স্বচ্ছতা রক্ষায়, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা হচ্ছে।