বিশ্বখ্যাত গিটারিস্ট এবং হার্ড রক সংগীতের এক অন্যতম বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব জন সাইকস (John Sykes) সম্প্রতি ক্যান্সারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে ৬৫ বছর বয়সে মারা গেছেন। সোমবার তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে শেয়ার করা এক বার্তায় এই দুঃখজনক খবরটি জানানো হয়েছে। সাইকস, যিনি তার অমর অবদান রেখে গেছেন হোয়াইটস্নেক, থিন লিজি এবং টাইগারস অফ প্যান ট্যাং-এর মতো বিখ্যাত ব্যান্ডগুলোর মাধ্যমে, তার অনন্য গিটার পারফরম্যান্স এবং সুরের জন্য চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
সাইকসের সবচেয়ে স্মরণীয় অবদান হোয়াইটস্নেকের ১৯৮৭ সালের স্বনামধন্য অ্যালবাম “1987” এ, বিশেষত ‘স্টিল অফ দ্য নাইট’ এবং ‘ইজ দিস লাভ’ এর মতো আইকনিক ট্র্যাকে। এই অ্যালবামটি একাধিক চার্ট টপিং হিট নিয়ে আসার পাশাপাশি, সাইকসের খ্যাতি আরও প্রসারিত করে। তার দুর্দান্ত গিটার প্লে এবং সঙ্গীত নির্মাণের দক্ষতা আজও শ্রোতাদের মুগ্ধ করে।
গাইতে গাইতেই হঠাৎ অসুস্থ মোনালি ঠাকুর! তড়িঘড়ি ভর্তি হাসপাতালে
প্রসঙ্গত, জন সাইকসের জন্ম ১৯৫৯ সালে, ইংল্যান্ডের রিডিং শহরে। সঙ্গীতের প্রতি তার আগ্রহ খুব ছোটবেলা থেকেই শুরু হয় এবং তিনি তার ক্যারিয়ার শুরু করেন ‘স্ট্রিটফাইটার’ নামক ব্যান্ডের মাধ্যমে। ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিকে, নিউ ওয়েভ অব ব্রিটিশ হেভি মেটালের উত্থানের সময় তিনি যোগ দেন ‘টাইগারস অফ প্যান ট্যাং’-এ। যদিও সেখানে তার অবস্থান ছিল সীমিত, তবে তার সঙ্গীত জীবনে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিল। এরপর ১৯৮২ সালে তিনি ‘থিন লিজি’ ব্যান্ডে যোগ দেন, যেখানে তিনি অনেক সফলতা অর্জন করেন।
এছাড়া, ১৯৮৭ সালে সাইকস হোয়াইটস্নেকে যোগ দিয়ে সেই ব্যান্ডকে তার ক্যারিয়ারের শীর্ষে নিয়ে যান। তবে, ডেভিড কভারডেলের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে সাইকস ১৯৮৭ সালের পর ব্যান্ডটি ছেড়ে দেন। ১৯৮৮ সালে তিনি ‘Blue Murder’ ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে ড্রামার কারমিন অ্যাপিস এবং ব্যাসিস্ট টনি ফ্র্যাঙ্কলিনের সাথে কাজ করেন। এই ব্যান্ডটি দুটি অ্যালবাম প্রকাশ করে, তবে এটি শীঘ্রই ভেঙে যায়। জীবনের শেষ সময়ে সাইকস, ডেফ লেপার্ডের প্রয়াত গিটারিস্ট স্টিভ ক্লার্কের সাথে কাজ করেছিলেন এবং পরে তার একক ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন, যা তাকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে। তার অসাধারণ গিটার দক্ষতা, সঙ্গীতের প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং হার্ড রক সঙ্গীতের জগতে তার অমূল্য অবদান সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জন সাইকসের প্রয়াণ হার্ড রক মিউজিকের এক বিশাল শূন্যতা সৃষ্টি করেছে, কিন্তু তার সংগীত সবসময় শ্রোতাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে। এটি সঙ্গীত ইতিহাসের এক অমর অধ্যায়, এবং সাইকসের আত্মা চিরকাল রক অঙ্গনে বিরাজ করবে।