শুক্রবার শেয়ারবাজারে যে ধাক্কা এসেছে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের বেশ কিছু মূল্যায়ন রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বাজার খানিকটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও শুক্রবার সকালে বাজারের পরিস্থিতি আবারো খারাপ হয়ে ওঠে। দিনটির শুরুতে সেনসেক্স ৮০,০০০ পয়েন্টে গিয়ে পৌঁছেছিল, কিন্তু দ্রুতই তা ৬৭০ পয়েন্ট নিচে নেমে যায়, যার ফলে সেনসেক্স ৭৯,২৭৪ পয়েন্টে এসে দাঁড়ায়। নিফটি ফিফটিরও একই অবস্থা দেখা গেছে, সেখানে ১৮৮ পয়েন্টের পতন হয় এবং তা ২৪,০০০ পয়েন্টে গিয়ে ঠেকেছে।
চিনে অজানা ভাইরাসে আক্রান্ত বহু মানুষ
প্রসঙ্গত, শেয়ারবাজারের এই পতনের প্রধান কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন। প্রথমত, হেভিওয়েট কোম্পানিগুলির অবস্থান দুর্বল ছিল। যেমন: এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, ইনফোসিস এবং টিসিএস—এসব প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারের গতিবিধিতে প্রভাব ফেলেছিল এবং দিনের শুরুতেই এগুলির শেয়ার দাম নেমে যায়। এতে বিনিয়োগকারীরা দ্রুত তাদের পুঁজি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যার ফলে বাজারে ধাক্কা আসে। দ্বিতীয়ত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনকালের প্রভাবও বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি এবং শেয়ারবাজারের উপর পড়েছে। বিশেষ করে, ট্রাম্পের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে শেয়ারবাজারে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, যার প্রতিফলন ভারতের শেয়ারবাজারেও দেখা যাচ্ছে। এইসব কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজার থেকে তাদের অর্থ তুলে নিতে শুরু করেছেন, ফলে বাজারের নিম্নমুখী প্রবণতা আরও তীব্র হয়েছে।
অন্যদিকে, ভারতীয় রুপি যে গত কয়েক মাস ধরে ডলারের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়েছে, তাও শেয়ারবাজারে এক প্রকারের চাপ সৃষ্টি করছে। এই পরিস্থিতি যদি দ্রুত স্বাভাবিক না হয়, তবে শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক রক্তক্ষরণ অব্যাহত থাকতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ডিসেম্বর মাসের কোয়ার্টারের ফলাফলও আশানুরূপ না হয়, তাহলে আগামী দিনগুলোতে আরও বড় ধাক্কা আসতে পারে। এছাড়া, বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে কমপক্ষে সাময়িকভাবে নিরাপদ বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকছেন, যার ফলে বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে। নিফটি আইটি, ব্যাঙ্কিং, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এবং ফার্মা সেক্টরগুলোতে বিপুল চাপ ছিল, যা বাজারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে স্থগিত করেছে। সংক্ষেপে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিশেষভাবে অস্থির এবং এর একাধিক কারণ রয়েছে—বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, ডলারের দাম বৃদ্ধি, এবং শেয়ারবাজারের বৃহত্তম কোম্পানিগুলির দুর্বল অবস্থান। তবে, বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি দ্রুত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তাহলে এই রক্তক্ষরণ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।