বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম গৌরবোজ্জ্বল স্থান, ধানমন্ডি ৩২, যেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান তাঁর পরিবারের সাথে বাস করতেন, সেই বাড়িতে আবারও আক্রমণ চালানো হয়েছে। ২০২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতের অন্ধকারে মৌলবাদীরা এক ভয়াবহ হামলা চালায় এই ঐতিহাসিক স্থানে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে চিরকাল লাঞ্ছিত করার এক অপচেষ্টা বলে মনে হচ্ছে।
বুথফেরত সমীক্ষায় পালাবদলের পূর্বাভাস! ২৬ বছর পর কি দিল্লিতে ক্ষমতায় ফিরবে বিজেপি?
উলেখ্য, এই হামলার পেছনে যারা ছিল তারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা, যারা রাতের আঁধারে ধানমন্ডি ৩২-তে ঢুকে পড়ে। প্রতিবাদ ও ভাঙচুরের মিছিলে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা সেখানকার গেট ভেঙে প্রবেশ করে। এরপর তারা বাড়ির দেয়াল ও পাঁচিল ভাঙতে শুরু করে এবং মুজিবরের মুর্যালের ওপর আক্রমণ চালায়। শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তিও ভেঙে ফেলা হয়। রাত ৮টা ৪০ মিনিট নাগাদ বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। মৌলবাদীরা থেমে থাকে না, তারা রাতের অন্ধকারে আগুন ধরিয়ে দেয় বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে, যা জাতির জনকের প্রতি গভীর অবমাননা। এছাড়া, এই আক্রমণ চলাকালীন সময়ে, বিক্ষুব্ধ জনতা মিউজিয়াম থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর অবদান নিয়ে লেখা বইগুলো টেনে বের করে এনে সেগুলো আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এটি এমন এক ঘটনা, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে এক কঠিন দাগ রেখে যেতে পারে। ছবিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায়, দেশের ভেতরে ও বাইরে চরম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তবে প্রশ্ন উঠছে, কি ছিল এই হামলার আসল উদ্দেশ্য? একদিন আগেই, ৫ অগস্টও, বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে মৌলবাদী গোষ্ঠীর আক্রমণ ছিল। তখনও তারা এ ধরনের ভয়াবহ আক্রমণ চালিয়েছিল। আজকের হামলা কি সেই একই ধারাবাহিকতার অংশ? কি উদ্দেশ্যে মুজিবের স্মৃতি মুছে ফেলার এই চেষ্টা? এটি কি বাংলাদেশ ইতিহাসের সত্য ও মহান আদর্শগুলোকে মুছে ফেলার চক্রান্তের একটি মাত্র কিস্তি?
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের জনগণ যখন বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করছে, তখন এমন হামলা একে অপরকে বিভক্ত করার এক অশুভ পরিকল্পনা মনে হচ্ছে। এই হামলার পেছনে থাকা চক্রান্তের মূল লক্ষ্য বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকে মুছে ফেলা, দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করা এবং মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটানো। প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশ কি এখন একটি নতুন যুগে প্রবেশ করছে, যেখানে মৌলবাদী শক্তির উত্থান ইতিহাসের সঠিক মানে ও মানবাধিকারকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে? এর সঙ্গে, দেশবাসী এবং বিশ্বব্যাপী মানুষের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, যেখানে তাদের সজাগ থাকতে হবে এবং বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও আদর্শের পক্ষে দাঁড়াতে হবে। এখনই সময়, যাতে এই হামলাগুলির মাধ্যমে দেশের ইতিহাস ও আদর্শ ভূলুণ্ঠিত হতে না পারে। দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি অটুট রাখা সবার দায়িত্ব।