পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির প্রাক্তন স্বাস্থ্য পরিষেবা সেলের প্রতিষ্ঠাতা এবং আহ্বায়ক, ইন্দ্রজিৎ সিনহা, যাকে এলাকায় 'বুলেট' নামে পরিচিত, বর্তমানে এক দুঃখজনক অবস্থায় পড়েছেন। এক সময়ের রাজনীতির অঙ্গনে শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব আজ সেই করুণ অবস্থায় পৌঁছেছেন, যেখানে তাঁকে জীবনযাপন করার জন্য ভিক্ষা করতে হচ্ছে।
ট্রাম্পের রোষানলে এবার ভারতীয়রা, আমেরিকা থেকে 'বিতাড়িত'!
উলেখ্য, ইন্দ্রজিৎ সিনহা, যিনি কলকাতার বেলেঘাটার বাসিন্দা, রাজনীতির জগতে প্রবেশ করেছিলেন বহু বছর আগে। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন প্রায় দশ বছর আগে। তারপর থেকে তিনি বিজেপির হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের ভর্তি করানোর কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে রাজ্যে বিজেপির সুস্থতা ও দলীয় কার্যক্রমকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেই সময় তিনি ‘বুলেট’ নামে পরিচিতি লাভ করেছিলেন এবং এলাকার মানুষের কাছে সুনাম অর্জন করেছিলেন। কিন্তু এখন সে সব শুধুই স্মৃতি। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকার কারণে তিনি কাজকর্ম করতে অক্ষম হয়ে পড়েন। অন্ন সংস্থানের জন্য তার জীবন ছিল অত্যন্ত কঠিন। তিনি কোনো উপার্জন না পেয়ে অবশেষে জীবিকা নির্বাহের জন্য তারাপীঠ মহাশ্মশানে ভিক্ষা করতে শুরু করেন। তার এই করুণ অবস্থা সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং তা একযোগে সমাজের মধ্যে বিস্ময় সৃষ্টি করে।
প্রসঙ্গত, ইন্দ্রজিৎ সিনহার অবস্থা দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিটি ছড়িয়ে পড়তেই বঙ্গ বিজেপির অন্দরে তোলপাড় শুরু হয়। দলের রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার তৎক্ষণাৎ জেলা সভাপতিকে নির্দেশ দেন বুলেটের চিকিৎসা ব্যবস্থা করার জন্য। তবে জেলা সভাপতির সহায়তা প্রয়োজন হয়নি, কারণ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজেই এই পরিস্থিতির সমাধানে এগিয়ে আসেন। তিনি রাতারাতি কলকাতার নামী একটি মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে বুলেটের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। রবিবার রাতেই ইন্দ্রজিৎ সিনহাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এটি শুধু রাজনৈতিক দলের উদ্যোগের বিষয় নয়, বরং মানবিক সহানুভূতির একটি উদাহরণও বলা যায়। এক সময় যিনি ছিলেন দলের অন্যতম দাপুটে নেতা, আজ তারই অসুস্থতায় মানবিক সহানুভূতি প্রদর্শন করছে তারই দল। বিজেপির অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ ও শুভেন্দু অধিকারীর দ্রুত পদক্ষেপে বুলেটের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়, যা একটি প্রশংসনীয় উদাহরণ। এই ঘটনায় শুধু রাজনীতি নয়, মানবতার জয়ও হয়েছে, যা সমাজে নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম।