নয়া বছরের প্রথমেই ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞান সংস্থা ইসরো একটি নতুন পালক যোগ করল। বুধবার ভোরে, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা সেন্টার থেকে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হল শততম রকেট মিশন। ইসরোর পক্ষে এটি এক বড় অর্জন, যা ভারতের মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে রইল।
ম্যাকাউটের হরিণঘাটা ক্যাম্পাসের ভিতরেই অধ্যাপিকাকে সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দিল ছাত্র
ইসরোর জিএসএলভি এফ-১৫ রকেট সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়, যা নিয়ে কৃত্রিম উপগ্রহ এনভিএস-০২-কে পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করা হয়। ২৩ জানুয়ারি ভোর ৬টা ২৩ মিনিটে, শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশকেন্দ্রের দ্বিতীয় লঞ্চ প্যাড থেকে রকেটটি উৎক্ষেপণ হয়। রকেটটির সঙ্গে উৎক্ষেপিত হয়েছিল ২২৫০ কেজি ওজনের এই নেভিগেশন স্যাটেলাইট, যা মহাকাশে সঠিক পথ নির্দেশক হিসেবে কাজ করবে। এনভিএস-০২, বা ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম-০২, ভারতের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্যাটেলাইট। এটি ভারতীয় উপগ্রহ নেভিগেশন সিস্টেমের আরও একটি উন্নত সংস্করণ, যা ভারতের ভূগোল ও সময় নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। স্যাটেলাইটটির উৎক্ষেপণ ১৯ মিনিটের মধ্যে জিওসিঙ্ক্রোনাস ট্রান্সফার অরবিটে (GTO) স্থাপন করা হয়, যা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং এবং প্রযুক্তিগতভাবে প্রাসঙ্গিক। এটি ইসরোর শততম উৎক্ষেপণ হলেও, এই অভিযানের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। ১৯৭৯ সালের ১০ আগস্ট প্রথমবার শ্রীহরিকোটা থেকে এসএলভি-৩ রকেট উৎক্ষেপণ হয়েছিল, যদিও সেটি প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে বঙ্গোপসাগরে ভেঙে পড়েছিল। তার পর থেকে ইসরো একের পর এক অভিযান চালিয়ে আসছে এবং আজকের এই সাফল্য ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির ধারাবাহিক অগ্রগতির প্রতিফলন।
উৎক্ষেপণের আগে, ইসরোর চেয়ারম্যান ভি নারায়ণন তিরুমালা ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরে পুজো দেন, এবং সঙ্গী শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আশীর্বাদ নেন। এর পরই শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে এই ঐতিহাসিক উৎক্ষেপণ হয়। এটা উল্লেখযোগ্য যে, জিএসএলভি এফ-১৫ রকেটটি ইসরোর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত অর্জন। এটি দেশীয় ক্রায়োজেনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্মিত একটি ত্রিস্তরীয় রকেট, যা মহাকাশে সফলভাবে উপগ্রহ পৌঁছানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে, ১৬টি উৎক্ষেপণের মধ্যে ৬টি অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল, কিন্তু এই অভিযানে সাফল্য দেশের মহাকাশ প্রযুক্তির উন্নতির প্রতীক। শততম উৎক্ষেপণের মাধ্যমে ইসরো আরও একধাপ এগিয়ে গেল। ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞান আজ আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছেছে, এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর জন্য এটি এক দৃষ্টান্ত। আগামী দিনে আরও এমন সাফল্যের অপেক্ষায় রয়েছে ভারত, যখন ইসরো বিশ্বের মহাকাশ গবেষণায় নতুন সীমানা স্পর্শ করতে চলেছে।