চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারি নিয়ে উত্তাল রয়েছে বাংলাদেশ । এরই মাঝে সেদেশে গ্রেপ্তার হলেন আরও এক সন্ন্যাসী শ্যাম দাস । হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার অভিযোগ উথছে। তাদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দাওয়া হচ্ছে। সেই অবাহে ইসকনের সন্ন্যাসীরা গেরুয়া পোশাক পরবেন না। তিলক কাটবেন না। কপালে সিঁদুর পড়বেন না। মাথা ঢেকে রাখবেন। ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র রাধারমণ দাসের বললেন, এখন বাংলাদেশের যা পরিস্থিতি, তাতে আগে জীবন বাঁচানোর উপরে জোর দিতে হবে। সেটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ , থাকতে হবে সুরক্ষিত। আর সুরক্ষিত থাকার জন্য আপাতত হিন্দু সন্ন্যাসী এবং ভক্তদের গেরুয়া পোশাক এড়িয়ে যাওয়ার মতো পরামর্শ দিয়েছেন। যাতে বোঝা না যায় যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হিন্দু বা ইসকনের ভক্ত।
উলেখ্য, আর সেই ভয়টা চেপে বসেছে হিন্দু সন্ন্যাসী তথা বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণদাসের গ্রেফতারির পর থেকে। বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে আক্রমণ নেমে এসেছে ইসকনের সন্ন্যাসীদের। এমনকী ইসকনের প্রায় ৬৩ জন সন্ন্যাসীকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। যাঁরা বাংলাদেশের নাগরিক। ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র অভিযোগ করেছেন, গত কয়েকদিন ধরেই ইসকন সন্ন্যাসী এবং ভক্তদের লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র দাবি করেছেন যে গত কয়েকদিন ধরে চিন্ময় প্রভুর সচিবের খোঁজ পাচ্ছেন না। তাঁকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করেছেন ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র। তিনি দাবি করেছেন, চিন্ময় প্রভুর মামলায় কী হয়েছে, সেটা নিয়ে তাঁর সঙ্গে নিয়মিত কথা হত। সার্বিকভাবে বাংলাদেশে কী পরিস্থিতি, তা নিয়েও খোঁজখবর নিতেন।
বাংলাদেশের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের পরেও সে দেশের একাধিক প্রান্তে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠে এসেছে। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, দু’দিন আগেই চট্টগ্রামে একটি মন্দিরে হামলা এবং ভাঙচুর হয়েছে। আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ি ও দোকানেও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ‘ডিডি নিউজ়’-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশের শিবচরে ইসকনের একটি কেন্দ্র জোর করে বন্ধ করিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইসকনের কলকাতার মুখপাত্র রাধারমণও সমাজমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। পাশাপাশি, চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির পরে আরও দুই সন্ন্যাসীকে চট্টগ্রাম পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ‘ইন্ডিয়া টুডে’। গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশ শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়। তার পর থেকে সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর একের পর এক হামলা চলেছে বলে অভিযোগ। পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদন অনুসারে, হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশের ৫০টি জেলায় সংখ্যালঘুদের উপর ২০০টিরও বেশি হামলার অভিযোগ উঠে এসেছে। তারইমধ্যে আজ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার হওয়া চিন্ময় প্রভুকে আদালতে পেশ করা হবে। যদিও আদালতে তাঁর হয়ে সওয়াল করার জন্য কোনও আইনজীবীকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে যে চিন্ময় প্রভুর হয়ে সওয়াল করলে ভয়ানক পরিণতি হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাই কেউ মামলায় লড়তে চাইছেন না। যদিও পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে কঠোর নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। মোতায়েন করা হচ্ছে অনেক পুলিশ।