চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারির পর থেকেই দিনদিন উত্তপ্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। এই আবহেই বাংলাদেশে নতুন করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও দুই সন্ন্যাসী এবং চিন্ময় দাসের সেক্রেটারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার অভিযোগ রয়েছে। এই অবস্থায়, হিন্দুদের নিরাপত্তার দাবিতে ইসকন আজ রবিবার বিশ্বজুড়ে প্রার্থনাসভার আয়োজন করেছে। ইসকন মুখপাত্র রাধারমণ দাস এই প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন। ইসকনের বক্তব্য অনুযায়ী, ১৫০টিরও বেশি দেশের লক্ষ লক্ষ ভক্ত এই সভায় যোগদান করবেন। চিন্ময় কৃষ্ণ যে মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন, সেই সংক্রান্ত চলমান তদন্তে সন্দেহভাজন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে গ্রেপ্তার হওয়া দুই সন্ন্যাসীকে। তবে মামলাগুলি সম্পর্কে স্পষ্ট কোনও বিবরণ দেয়নি পুলিশ।
চিকিৎসা করতে ভারতে আসবেন না চিন্ময়কাণ্ডে বাংলাদেশকে হুশিয়ারি শুভেন্দুর
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে নতুন করে গ্রেপ্তার হওয়া দুই সন্ন্যাসী হলেন রুদ্রপ্রতি কেশব দাস এবং রঙ্গনাথ শ্যামসুন্দর দাস। এই দুই সন্ন্যাসীই চট্টগ্রামের জেলে থাকা চিন্ময় কৃষ্ণকে খাবার, ওষুধ এবং কিছু টাকা দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর তাঁদেরও গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার রাতেই ইসকন কলকাতার মুখপাত্র রাধারমণ দাস দাবি করেছিলেন, চিন্ময় কৃষ্ণের পর বাংলাদেশে আরও এক সন্ন্যাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্যাম দাসের ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছিলেন, ‘তিনি কি সন্ত্রাসী? এইভাবে নিরপরাধ ব্রহ্মচারীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় ইসকন গভীরভাবে মর্মাহত।’ যদিও পরে বাংলাদেশ পুলিশ জানায় একজন নয়, শনিবার রাতে শ্যাম দাসের সঙ্গে আরও এক সন্ন্যাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উলেখ্য, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর দমন-পীড়ন অব্যাহত রয়েছে। ২০০টিরও বেশি মন্দিরে ভাংচুর চালানো হয়েছে এবং ইসকনের সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। ইসকনের উপর নিষেধাজ্ঞার দাবিতে হাইকোর্টে মামলা করা হলেও, আদালত বিশ্বব্যাপী ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে অস্বীকার করেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, 'বাংলাদেশ প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, যাতে হিন্দু-সহ সমস্ত সংখ্যালঘুর সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা হয়।' হিন্দুদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথাও উল্লেখ করেছে নয়াদিল্লি। হিন্দু সন্ন্যাসীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইসকন।